ধর্ষণের শিকার এক নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সামনে থেকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া যায়। গত রোববার বিকালে ওই নারীর স্বজন ও গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার রাত থেকেই ওসিসিসহ হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে অপরিচিত ব্যক্তিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। গত রোববার সকাল থেকে ওসিসির সামনে অবস্থান নেন ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি। বিকালে অপহরণের সঙ্গে তারাই যুক্ত ছিলেন। তবে রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ওই তরুণী, তার মা ও তার চাচীর খোঁজ পাওয়া যায় যশোরের কেশবপুর উপজেলার এক বাড়িতে। সেখানে ওই তরুণী বলেন আমরা নিজেরাই স্বইচ্ছায় এখানে এসেছি আমাদের আত্মীয়ের বাড়িতে। ধর্ষণের বিষয়ে তিনি জানান, এমন কিছু তিনি জানেন না। হাসপাতালে কীভাবে গেছেন তাও জানেন না। কারো সম্পর্কে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। মাইক্রোবাস যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজি তৌহিদ্জ্জুামানকে আটকে রাখে স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আটক গাজি তৌহিদ ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজি এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এর আগে শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজি এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। গত শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুমন রায় বলেছেন, শনিবার রাতে ওই কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে আসেন। এরপর তাকে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় ওসিসি থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (সোনাডাঙ্গা) আবু নাসের মো: আল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, ওই নারী তার মায়ের সঙ্গে গেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। গাজি তৌহিদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। শনিবার ওই তরুণী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন, রাতে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে তাকে ধর্ষণ করা হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকদিন ধরে তাকে ধর্ষণ করেন চেয়ারম্যান। ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমদ বলেন, এ ধরনের কিছু আমার জানা নেই।
খুলনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেছেন, এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী বা তার পরিবারের কেউ এখনও থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।