কুমিল্লায় কক্সবাজারের মো. মুছা আলী নামের এক ব্যবসায়ী ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। গত বুধবার গভীর রাতে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন বাগুর বাসস্টেশন এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মুছা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উত্তর নাজিরপাড়া গ্রামের মৃত মাজেদ আলীর ছেলে। তিনি টেকনাফের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাপড় ও জুতার ব্যবসা করতেন। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের তুলাগাঁও গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসে খুন হন।
নিহতের স্ত্রী নাজিয়া আক্তারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তার স্বামী মো. মুছা আলী বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিচিত একজনের মোবাইল ফোনে কল পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। রাত ৯টার দিকে তার মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর মোবাইলে কল করে এক ব্যক্তি জানায় তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা দিলে ১০ মিনিট পর ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে অপহরণকারীদের দেয়া একটি বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা হত্যাকাণ্ডের খবর পান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, কয়েকজন যুবক ওই ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রী রাজিয়া আক্তার বলেন, তার স্বামী ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে কাপড়, জুতা ও কসমেটিকস নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জামতলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের দোকানে বিক্রি করতেন। বুধবার রাতে সোহেল নামের একজন পরিচিত ব্যক্তির কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন। তিনি আরও বলেন, যারা তার স্বামীকে আটক করেছিল তারা প্রথমে ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল, পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা পাঠানোর পরও তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ঘাতকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া জানান, নিহত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ৩টি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত রোববারও কুমিল্লার আদালতে একটি মাদক মামলার হাজিরা ছিল। ওসি আরও জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতরা নিহত মুছা আলীর পূর্ব পরিচিত ছিল। হত্যাকাণ্ডের পেছনে মাদক কিংবা আর্থিক বিরোধ থাকতে পারে কি না বা কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে এখনই বলা যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।