সুদাম সূত্রধর

কখনো ভাবতে পারেননি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাবে স্ত্রীসহ দুই কন্যা

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কাঠমিস্ত্রি সুদাম সূত্রধর স্বপ্নেও জানতেন না মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্ত্রীসহ দুই মেয়ের মৃত্যু হবে এবং তাদের হারিয়ে একাকি জীবনযাপন করতে হবে তাকে। আর বুক চাপড়িয়ে এসব কথা বলছিলেন তিনি। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তার বাবারও মৃত্যু হয়। আর সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী-কন্যাদের হারিয়ে শোকের মাতম চলছে গ্রামের বাড়ি শাহজাদপুর উপজেলার জুগীবাড়িতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাদলা নামকস্থানে বাসচাপায় সিএনজি যাত্রী মা মিতু বিশ্বাস (৩০) ও শিশু মেয়ে ইচ্ছামনি (৭) নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত তার মেয়ে স্কুলছাত্রী কথা মনিও গত শুক্রবার ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৩) মারা যায়। এরআগে তাদের তিনজনের মরদেহ রাখা হয়েছিল বাড়ির উঠানে। সেখানে আর্তনাদ করতে থাকেন সুদাম সূত্রধর। তাকে ঘিরে বসে থাকেন আত্মীয়স্বজনসহ গ্রামের লোকজন। সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ওই তিনজনের মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যর অবতরণা ঘটে। গ্রামবাসী বলছেন, সুদাম সূত্রধর পাবনার সাথিয়া উপজেলার নারিন্দা গ্রামের নির্মল চন্দ্র সূত্রধরের ছেলে। তিনি শাহজাদপুরের জুগীবাড়ি গ্রামের বিনয় চন্দ্র সূত্রধরের মেয়ে মিতু সূত্রধরকে বিয়ে করেন প্রায় ১১ বছর আগে। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় একটি ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করেন। এ মর্মান্তিক ঘটনার দিন দুপুরের দিকে সুধামকে অবহিত করা হয়। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ও মেয়ে মারা যায় এবং পরদিন আহত বড় মেয়ে স্কুলছাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এখন তার শ্যালিকা, বোন ও ভাগ্নে এবং তার পরিবারের আর কেউ নেই। নিঃস্ব সুদামের চোখে শুধুই কান্না। মাঝেমধ্যে চিৎকার করছেন এবং তাকে এখন কেউ বারণও করতে পারছে না। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার পুলিশ ওইদিন রাতেই ঘাতক বাসটি জব্দ এবং শুক্রবার বাসচালক আমিরুল ইসলাম নাজমুলকে (৪৪) গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং উপজেলা পরিষদ থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।