দিনাজপুরে কৃষিতে নতুন সংযোজন ‘স্কোয়াশ’ চাষ

স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষি

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মোঃ সিদ্দিক হোসেন, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)

দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলায় নতুন ফসল স্কোয়াশ চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চাষিরা। ফসলটি চাষ করে বেশ লাভবানও হয়েছেন চাষিরা। কয়েকজন চাষি জানান, বাজারে চাহিদা বাড়ছে। ফলে তারাও লাভ হচ্ছেন। কৃষকরা জানান এই সবজিটা তাদের কাছে বেশি লাভজনক মনে হচ্ছে। বর্তমানে টমেটো থেকে স্কোয়াশে বেশি লাভ হচ্ছে।’ তবে ধান বা অন্য ফসলে তেমন লাভ থাকে না বলেও জানান তারা। দিনাজপুরের অনেকের খেত থেকে পাইকাররা স্কোয়াশ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে সামার স্কোয়াশ চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে পারলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে জমিতে প্রয়োজনের তুলনায় কোনোভাবেই যেন বেশি জৈব সার বা গোবর সার না দেয়া হয়। আর কীটনাশক ও ইউরিয়ার সার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আর এজন্য ফসলটি নিরাপদ ফসল হিসেবেও মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে। ফসল সংগ্রহের ক্ষেত্রে ফল পরাগায়নের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহের সময় ফলে সবুজ রং থাকবে এবং ফল মসৃণ ও উজ্জ্বল দেখাবে। নখ দিয়ে ফলের গায়ে চাপ দিলে নখ সহজেই ভেতরে ঢুকে যাবে, যা ভবিষ্যতের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা শসা আকৃতির এই সবজি লম্বা হলেও রং মিষ্টি কুমড়ার মতো। শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অতি পুষ্টিকর। সবজিটি ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্যও বেশ উপকারী। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে পারলে একদিকে যেমন কৃষিভিত্তিক পণ্যের আমদানি কমে যাবে, তেমনি ভালোভাবে প্রয়োগ ঘটলে রপ্তানি সম্ভব হবে।’ উচ্চমূল্যের ফসল চাষসহ জলবায়ুর ঝুঁকি এড়াতে সক্ষম লাগসই কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ, আন্তঃফসলের আবাদের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিবিড়তা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। স্বল্প জীবনকালীন ফসলের উৎপাদন ও শস্য নিবিড়তা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক কৃষিতে আরো বেশি অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।’ কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ‘দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প’ সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের সার-বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লাভজনক এই ফসটির উৎপাদন বাড়াতে আগামীতে এই অঞ্চলের সব উপজেলায় ব্যাপকভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কাজ চলমান আছে।