পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। তার আগেই দেশটির বিভিন্ন স্থানে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা। বিস্ফোরণগুলোতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, গত শুক্রবার বালোচিস্তানের বিভিন্ন শহরে হাতবোমা বিস্ফোরণে পিপিপি কর্মীসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে করাচির প্রাদেশিক নির্বাচন কমিশন (পিইসি) কার্যালয়ের কাছেও।
এদিন বালোচিস্তানের কালাত শহরের মুঘলসরাই এলাকায় অজ্ঞাত একজন মোটরসাইকেল আরোহী পিপিপির নির্বাচনি কার্যালয় লক্ষ্য করে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সেটি বিস্ফোরিত হলে তিনজন পিপিপি কর্মী আহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার কোয়েটার পূর্ব বাইপাস এলাকায় ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। অজ্ঞাত হামলাকারীরা একটি হাতবোমা নিক্ষেপ করলে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে। বোমাটি একজন প্রার্থীর নির্বাচনি কার্যালয় লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। এতে চারজন আহত হন। প্রথম ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। তবে সেখানে কেউ হতাহত হননি।
এছাড়া, খারান এলাকায় দুটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। বিস্ফোরকগুলো একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) প্রার্থী মীর এজাজ সানজরানির কার্যালয়ের কাছে স্থাপন করা হয়েছিল। সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানির ছোট ভাই হলেন মীর এজাজ সানজরানি। এবারের নির্বাচনে তিনি চাগাই-কাম-নুশকি-কাম-খারান-কাম-ওয়াশুক থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পঞ্জগুরে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে ন্যাশনাল পার্টির প্রাদেশিক সভাপতি রেহমত সালেহের বাসভবনে। বিস্ফোরণে বাড়িটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অজ্ঞাত লোকেরা গোয়াদরের জেওয়ানি শহরের একটি উচ্চ বিদ্যালয়েও গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। গ্রেনেডটি স্কুলের ছাদে বিস্ফোরিত হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। কেচ জেলায় পিপিপি প্রার্থী মীর আব্দুল রউফ রিন্দের বাড়িতে গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। হামলার সময় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তবে বিস্ফোরণে কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
শুক্রবার কেচ জেলার মান্দ এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর ফিদা হাকিম রিন্দের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে অস্ত্রধারীরা। তার গাড়িতে অন্তত তিনটি গুলি লাগে। তবে আরোহীরা অক্ষত রয়েছেন।
এদিন হামলা চালানো হয়েছে করাচির প্রাদেশিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়েও। রাতে পিইসি কার্যালয়ের বাইরে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে বিস্ফোরক ভরে কমিশনের পার্কিং এলাকায় রেখে গিয়েছিল। একজন পরিচ্ছন্নকর্মী ব্যাগটি তুলে একটু দূরে নিয়ে ছুড়ে ফেলেন। আঘাতের ফলে ব্যাগে থাকা বোমার ফিউজ বিস্ফোরিত হয়। তবে টাইম ডিভাইস সক্রিয় না থাকায় বিস্ফোরক পদার্থগুলো বিস্ফোরিত হয়নি।