জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে রাতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী জাহিদ মিয়া আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। গতকাল দুপুর ১২টায় আশুলিয়া থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস অ্যান্ড ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহ হিল কাফি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো প্রধান আসামি জাবি ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, রংপুর জেলার হাসানুজ্জামান, নাগেশ্বরীর সাগর সিদ্দিকী এবং বগুড়ার সাব্বির সাগর। মোস্তাফিজ জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী, সাগর সিদ্দিকী, মুরাদ ও হাসানুজ্জামান স্নাতকোত্তর শেষ করে হলেই অবস্থান করছিল এবং সাব্বির সাগর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এছাড়া পলাতক দুই আসামি হচ্ছে নওগাঁ জেলার পতিœতলা এলাকার হাসিবুদ্দিনের ছেলে মানছুর রশিদ ওরফে মামুন (৪৪) এবং মুরাদ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস অ্যান্ড ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহ হিল কাফি জানান, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে কৌশলে জাহিদ মিয়াকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে মামুনের পূর্ব পরিচিত মোস্তাফিজের কাছে নিয়ে যায়। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে তাকে আটকে রাখেন। এরপর আটককৃতের স্ত্রীকে ফোন করে তার নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। মামুনের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ভেতরের ওই কক্ষে রেখে আসেন। এরপর তার স্বামী ওই দিকে আছে বলে ওই গৃহবধূকে হল-সংলগ্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় রাতেই ভুক্তভোগীর স্বামী জাহিদ মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো জানান, মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢাকেম) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)’তে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ব্রিফিংকালে এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফএম সায়েদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।