ধান-চালের বড় মোকাম দিনাজপুর বাহাদুর বাজারে পাইকারিতে চালের দাম কমছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত কমেছে। এতে ধানের দামও কিছুটা পড়ে গেছে। তবে পাইকারিতে দাম কমার কোনো প্রভাব খুচরা বাজারে এখনও পড়েনি। মূলত আমনের ধান-চালের জোগান বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে বলে দিনাজপুর ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে।
দিনাজপুর পাইকারি বাজারে চাল ও ধানের দামের হঠাৎ পতনে এখানকার ব্যবসায়ী ও কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। তারা বলছেন, প্রতি মণ ধানে ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং প্রতি কেজি চালে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। মোকাম ও হাটগুলোতে ধান-চালের বিক্রিও কমে গেছে। তারা বলছেন, এ বছর উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে এর আগে আমদানি করা ভারতীয় চালও রয়ে গেছে। ফলে সব মিলিয়ে দাম পড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দিনাজপুরে চালকলগুলোর গুদামে এবং চাল আড়তদারের মোকামে প্রচুর চাল মজুত আছে। এজন্য অনেক ব্যবসায়ী কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান গুণে চাল বিক্রি করছেন। চালের দাম কমে যাওয়ায় মিল মালিকেরা ধান কিনছেন না। ফলে ধানের দামও কমে গেছে। প্রতি কেজি মোটা চাল পাইকারিতে টাকা ও ২ হাজার টাকা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় বাজারের ধানের আড়তদাররা বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ধানের দাম কমেছে। স্বর্ণা ধানের দাম মণ প্রতি ১০০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুর ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি বলেন, অন্য বছরগুলোতে এই সময়ে ধানের সরবরাহ কম থাকে বলে চালের দাম কিছুটা বাড়ে। অথচ এ বছর উল্টো চিত্র, দাম কমেছে। এতে যেসব ব্যবসায়ী বেশি করে চাল মজুত রেখেছিলেন, তাদের অবস্থা খারাপ। বর্তমানে মোকামগুলোতে প্রচুর চালের মজুত জমে গেছে। অথচ বাজারে চাল কেনার পাইকারি ক্রেতা নেই। দিনাজপুরে সবচেয়ে বড় চালের মোকামগুলো এবং খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক-দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চালের দাম প্রতি বস্তায় প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগে যে পাইজাম প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমে ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। মোটা চালের (স্বর্ণা-৫, গুটি স্বর্ণা, হাইব্রিড স্বর্ণা) দাম বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ কামাল হোসেন জানান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদের দিক নির্দেশনায দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলায় ১২ দিনে ৩৮ বার অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ১ হাজার টাকা জরিমানা করে গুদাম ঘর সিলগালা করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।