কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম নিয়োগকে কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। সকাল ১০টা থেকে দফায় দফায় উপাচার্যের সাথে দেখা করেন উপাচার্য বিরোধী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শাখা ছাত্রলীগের একাংশ। এ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে আধা ঘণ্টা বাকবিত-তা করেন উপাচার্যবিরোধী শিক্ষক ও শাখা ছাত্রলীগের একাংশ।
এ সময় ছাত্রলীগের একাংশ কর্তৃক শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইউজিসি কর্তৃক নিয়োগ বাণিজ্যর তদন্ত চলমান থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট চেয়ারে বসার যোগ্যতা হারিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষককরা। শিক্ষকদের দাবি, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইউজিসি কর্তৃক গঠিত তদন্তের সুরাহা হওয়ার আগে কোন নিয়োগ বোর্ড করতে পারবে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ সময় উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরেফীনসহ প্রায় ৩০ জন শিক্ষক।
এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট এক বিবৃতি পাঠান গণমাধ্যমে। বিবৃতিতে বলা হয়, উপাচার্য ও শিক্ষকদের আলোচনা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই উপাচার্যের অফিস কক্ষে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বহিরাগত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা বলে অভিযোগ।
এদিকে পরে বিকাল তিনটায় উপাচার্যর বাংলোয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম নিয়োগ বোর্ড বসে। নিয়োগ বোর্ড থেকে কর্মকর্তা সমিতি চাকরী প্রার্থীদের বের করে দেন। তাৎক্ষণিক আবার প্রার্থীদের উপাচার্যের বাংলোয় নিয়ে আসেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে বাংলো গেইটে উপাচার্য বিরোধী শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং প্রশাসনপন্থি শিক্ষক ও শাখা ছাত্রলীগের একাংশ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। প্রায় ২০ মিনিট অপেক্ষা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতি বাংলো গেইট ছেড়ে চলে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরেফীন বলেন, আমরা উপাচার্যের সাথে সাধারণ কিছু কথা বলতে গিয়েছিলাম। সেখানে উপাচার্যের সাথে কথা বলার একপর্যায়ে হঠাৎ করে বহিরাগত অছাত্ররা কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে ও আমাদের চরমভাবে হেনস্তা করে। আমাদের একটাই দাবি, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইউজিসি কর্তৃক গঠিত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নিয়োগ বোর্ড চলবে না। এছাড়া অছাত্রদের কর্তৃক শিক্ষকদের হেনস্তার বিচার করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা আজকের এই কাল্পনিক ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি মনে করি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। যারা জাতীয় প্রোগ্রামে তছনছ, কম্পিউটার এসব বিষয় নিয়ে আপনারা তো জানেন, এসবের তদন্ত হওয়া উচিত। ভুতের মুখে রাম রাম।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিন্দুমাত্র কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমার বিরুদ্ধে এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীরা যা করেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি ওইসব শিক্ষার্থীদের চিনিও না। দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ক্লিয়ার বলছি- আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। নিয়োগ বোর্ড যা হয়েছে, সব দুর্নীতিমুক্ত।