ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশে নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনে আগ্রহী কানাডা

বাংলাদেশে নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনে আগ্রহী কানাডা

বাংলাদেশে একটি উন্নত ও বিশ্বমানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে কানাডা। বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাই কমিশনার লিলি নিকোলাস গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর দপ্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎকালে কানাডার হাই কমিশনার কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ও উন্নতমানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করাসহ স্বাস্থ্য খাত সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।

কানাডায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে- যাদের ভালো চিকিৎসার জন্য সেখানে দক্ষ নার্স, চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট দরকার। কানাডার হাই কমিশনার ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে, এই নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ হতে হবে। এর জন্য কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি উন্নত ও বিশ্বমানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন লিলি নিকোলাস। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ নার্স ও চিকিৎসক রয়েছে উল্লেখ করে- কানাডার হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় কানাডার হাই কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৯৫ হাজার শিক্ষিত নার্স আছে, যারা বিশ্বের যে কোনো দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে, তাদের আরো বেশি দক্ষ ও বিশ্বমানের করতে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এজন্য দক্ষ প্রশিক্ষকও দরকার হবে আমাদের। এক্ষেত্রে কানাডা সরকার, বাংলাদেশে যে উন্নতমানের টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে- তা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও নার্সিং পেশাকে যুগোপযোগী করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উদ্যোগের পাশাপাশি কানাডা সরকারের সহায়তা পেলে বাংলাদেশের নার্সিং সেক্টরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে।’

আলোচনায় কানাডার হাই কমিশনার বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ করে প্রাইভেট মেডিকেলে অধিক সংখ্যক সিজারিয়ান বেবি জন্ম নেয় বলে উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা, গ্রামের মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য করা প্রসঙ্গেও কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বর্তমানে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। একইসাথে, দেশের প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামে থাকা মেয়েদের বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদানসহ গ্রামীণ মায়েদের জন্য ইন্সটিটিউশনাল ডেলিভারি সিস্টেম সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট মাত্র ১ শতাংশ এবং কানাডার স্বাস্থ্য খাতে বাজেট ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ এত কম বাজেটে এত বিরাট সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারবে কি না এবং ভবিষ্যতে কানাডা সরকারের কোনো ধরনের সহায়তা লাগবে কি না- সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে কানাডা হাই কমিশনার জানতে চাইলে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আরো কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আরেকবার বৈঠকে বসবার আমন্ত্রণ জানান। কানাডা হাই কমিশনার ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উভয়েই পরবর্তীতে আরো একবার সাক্ষাতের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।

আলোচনাকালে, কানাডা হাই কমিশনের হেড অব কো অপারেশন অ্যান্ড কাউন্সিলর জো গুডিংস এবং ভারপ্রাপ্ত রাজনৈতিক কাউন্সিলর সিয়োভান কার কানাডা হাই কমিশনারের সাথে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত