নওগাঁর মহাদেবপুরে পারিবারিক দ্বন্দ্বে স্বামী-স্ত্রী গ্যাসের ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এর আগে রাত ৯টার দিকে তারা গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। নিহতরা হলেন- জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বরাইল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুমন (৪০) ও তার স্ত্রী গোলাপি (৩০)।
নিহতের পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়- সুমন পেশায় একজন দিনমজুর। সুমনের বড় স্ত্রী খাদিজা কে না জানিয়ে গোপনে গত এক সপ্তাহ আগে সে গোলাপিকে বিয়ে করে। গত মঙ্গলবার খাদিজা তার বাবার বাড়ি গেলে এ সুযোগে ছোট বউ গোলাপিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন সুমন। গত বুধবার বিকালে খাদিজা বাড়ি আসার পর থেকেই ঝগড়া চলছিল। রাতেই তারা এক সাথে খাবারও খাই। পারিবারিক দ্বন্দ্বে রাত ৯টার দিকে সুমন ও গোলাপি গ্যাসের ট্যাবলেট সেবন করলে প্রতিবেশীরা জানতে পারেন। পরে তাদের উদ্ধার করে রাত ১১টার দিকে নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২টার দিকে গোলাপি ও রাত ২টার দিকে সুমন মারা যান।
সুমনের প্রতিবেশী চাচি গৃহবধূ চাম্পা বলেন, সুমনের আগের সংসারে দুই সন্তান ও স্ত্রী আছে। দিনমজুর হওয়ার পরও গোপনে আরেকটি বিয়ে করে গত মঙ্গলবার বাড়ি নিয়ে আসে। এ সময় বড় বউ তার বাবার বাড়ি ছিল। সংবাদ পেয়ে বড় বউ খাদিজা মঙ্গলবার বিকালে বাড়ি আসে। এরপর থেকে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। রাতেও তারা সবাই এক সাথে খাবার খেয়ে ছোট বউকে নিয়ে শুয়ে পড়ে। সুমন বড় বউয়ের কাছে যেতে চাইলেও দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাত ৯টার দিকে হয়ত তারা দুজনে গ্যাসের ট্যাবলেট সেবন করে। বিষয়টি জানার পর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু আনসারি বলেন, হাসপাতালের নিয়ে আসার পর থেকেই তাদের দুজনের অবস্থা খুবই গুরুত্বর ছিল। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রেফার্ড করার প্রক্রিয়া করা হলেও রোগীর স্বজনরা অনত্র নিতে চায়নি। তারপরও তাদের যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গোলাপি ও পরে সুমন মারা যায়। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বে গ্যাসের ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ময়নাতদন্তের পর আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।