নিজের কবরস্থান বানিয়ে বসবাস শুরু করেছেন ৯০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ। বলেছেন, পীরের আদেশে তিনি এ কাজ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটিহারী গ্রামে। বৃদ্ধের নাম মোহাম্মদ আলী। জানা যায়, কৃষক মোহাম্মদ আলী মৃত্যুর আগে নিজেই নিজের কবরস্থানে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। তার ইচ্ছা মৃত্যুর পর এখানেই যেন তাকে দাফন করা হয়। মোহাম্মদ আলী এলাকায় দয়াল ফকির নামেও পরিচিত। ১১ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট প্রস্ত ছাদের এই ঘরটি তৈরি করতে ২ বছর সময় লেগেছে। খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। ঘরের ভেতরে বাইরে লাগানো হয়েছে রঙিন বাতি। মোহাম্মদ আলীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ঘরটি নির্মাণের পর খালি পড়েছিল। পীরের মুরিদ হওয়ায় ২ বছর ধরে এই স্থানটিতে ওরসের আয়োজন করা হয়। গত চার দিন ধরে এখানে খাট ফেলে বসবাস করছেন তিনি। মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী রাশিদা বেগম বলেন, চার দিন ধরে এই ঘরেই বসবাস করছেন তার স্বামী মোহাম্মদ আলী। খাবারের সময় শুধু বাসায় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন। বাকি সময় এই ঘরেই থাকেন তিনি। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তাদের পরিবারে মোট ১১ জন সন্তান রয়েছেন। পরিবারের সব সদস্য বিষয়টি মেনে নিতে না পারলেও তার স্বামী একক ইচ্ছায় এখানে বসবাস করছেন। ২ বছর ধরে এখানে ওরসের আয়োজন করা হয়। তার ইচ্ছা, মৃত্যুর পর যেন তাকে এই ঘরের ভেতর দাফন করা হয়। মোহাম্মদ আলী বলেন, আসমাঈল শেখের ছেলে মোহাম্মদ আলী প্রায় ৭০ বছর আগে গাজীপুর জেলার কালীয়াকৈর উপজেলার চানপুরের পীর আব্দুস সামাদ চানপুরির কাছে ধর্মীয় শিক্ষা নিয়েছিলেন। এরপর থেকে পীর চানপুরির নির্দেশনায় জীবন পরিচালনা করছেন। মৃত্যুর পর যেন তাকে এখানে সমাহিত করা হয়। ২০১৯ সালে এই ঘরের কাজ শুরু হয় দুই বছর সময় লাগে ঘরটি নির্মাণে। এই ঘরটি তার মাজার। পীরের আদেশেই তিনি কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ ও ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। কিশোরগঞ্জের জামিয়া নূরানী মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, ইসলাম ধর্মের মতে কবরস্থান নির্ধারণ করে সেখানে বসবাসের কোনো নিয়ম নেই। যদি কোনো ব্যক্তি এমনটা করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই সে ব্যক্তির উদ্দেশ্য ভন্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। মানুষ কোন জায়গায় মৃত্যুবরণ করবেন, সেটা একমাত্র আল্লাহই জানেন। সুতরাং, পূর্ব থেকে কোনো ব্যক্তি কবরের জায়গা নির্ধারণ করে সেখানে বসবাস করা শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নেই।