নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার এক আসমি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত বুধবার বিকালে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ৮নং আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলাম ওই আসামি জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি দেওয়া আসামির নাম মেহরাজ উদ্দিন (৪৮)। সে চরওয়াপদা ইউনিয়নের নুরুল আমিনের ছেলে।
চরজব্বর থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামি মেহরাজ দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে মামলার প্রধান আসামি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার ও মেহরাজ উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, নির্যাতিত শিশু আদালতে ২২ ধারায় ঘটনার বিবরণ দিয়ে জবানবন্দি প্রদান করে। মামলা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের একটি বাড়িতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে ২টা থেকে ২টার মধ্যে বসত ঘরের সিঁধ কেটে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মামলার প্রধান আসামি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার (৫৫) মো. মেহরাজকে দিয়ে ঘরের সিঁধ কাটিয়ে গরু বেপারী মো. হারুনকে (৪৫) নিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। ওই সুযোগে মেহরাজ ওই নারীর পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে। পুলিশ ঘটনার পর পরই সিঁধ কাটার কাজে ব্যবহৃত কোদাল, কাঁচি, কালো প্যান্ট ও কানটুপি জব্দ করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের মুন্সীকে প্রধান আসামি ও হারুনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আবুল খায়েরকে গ্রেপ্তার করে। পরে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চরক্লার্ক ইউনিয়ন থেকে মেহেরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ধর্ষণ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় ধর্ষকরা কানের স্বর্ণের দুল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। পরে মেয়ের হাতের বাঁধন খুলে দেয় এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাদের প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি ধমকি দেয়া হয়। মূলত হারুন গৃহবধূর বসতঘরে মালামাল আছে বলে মেহেরাজকে চুরি করতে ইন্ধন জোগায়। মেহরাজ রাজি হলে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে।