একদিকে কষ্টের ফসল রক্ষা। অন্যদিকে প্রকৃতিও অক্ষত। এমনটা ভাবাই যায় না। নানা কারণে ‘বিষ’ প্রয়োগই কৃষিকাজের একমাত্র কৌশল হয়ে উঠছে। তবে এক্ষেত্রে বিকল্প পথ দেখাচ্ছে ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস। সাইপ্রাস সেখানে চাষের জমিতে ইঁদুরের অত্যাচার থেকে চাষিদের রক্ষা করছে বিরল প্রজাতির পেঁচা। সামাজিক মাধ্যমে চর্চার শীর্ষে উঠে এসেছে সাইপ্রাসের এই বিরল কাণ্ড। খবর এএফপির। রিপাবলিক অব সাইপ্রাস এবং রিপাবলিক অব নর্দার্ন সাইপ্রাসের মধ্যবর্তী দিগন্ত বিস্তৃত কৃষিজমির অনেকটাই নো ম্যানস ল্যান্ডের মধ্যে পড়ে। সীমান্ত এলাকা বলেই ওই জমির ফসলের দেখভালে অসুবিধায় পড়েন চাষিরা। এদিকে ইঁদুরের উৎপাত দিনে দিনে বেড়েই চলেছিল। বিষ প্রয়োগ ছাড়া সমস্যার অন্য কোনও সমাধান জানা ছিল না কৃষকদের। এই অবস্থায় মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে আসে ‘বার্ডলাইফ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারাই দুই দিকের চাষিদের জানায়, সমাধান হতে পারে ইঁদুরের যম পেঁচা। প্রস্তাব পছন্দ হতে কাজ শুরু হয়ে যায়। দুই দেশের সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় বিভিন্ন গাছের ডালে পেঁচাদের থাকার ব্যবস্থা হয়। বসানো হয় ৫০টি কাঠের বাক্স। পাশাপাশি ‘বার্ডলাইফ’ এর সদস্য কৃষকদের জানিয়ে দেন, আপাতত কোনোভাবেই যেন জমিতে ইঁদুর মারা বিষ না দেওয়া হয়। এতেই কাজ হয়। পেঁচারা মানুষের তৈরি বাসার সুযোগ নেয়। তাদের খাদ্য হয় চাষের জমিতে উৎপাত করা ইঁদুর। পরিসংখ্যান বলছে, বছরে কম করে হলেও পাঁচ হাজার ইঁদুর মারে চাষের জমির আশপাশে বাসা বাঁধা পেঁচারা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বার্ডলাইফ সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপে কমে আসা ‘বার্ন’ প্রজাতির পেঁচা ‘কৃষকবন্ধু’ হয়ে উঠেছে। একদিকে যেমন ইঁদুরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাচ্ছেন চাষিরা, তেমনই বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে না জমিতে। পাশাপাশি বিরল প্রজাতির পেঁচাগুলো পুনর্বাসনের সুযোগ পেয়ে বংশবিস্তার করছে।