সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডায়ালাইসিস ইউনিটের বেহাল দশা : নেই ওষুধ ও চিকিৎসক
সংস্কারের অভাবে বিকল মেশিন
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা হাসপাতাল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস বিভাগে কিডনি রোগী ভর্তির পর বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বজনদের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও এখানে বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর সেটা দিয়ে চিকিৎসা চিচ্ছেন সেবিকারা। অধিকাংশ ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট থাকায় চরম বিপাকে রোগী ও স্বজনরা। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের বেহাল দশা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ হাসপাতালের পরিচালক। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (সামেক) সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম স্বল্পপরিসরে ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল চালু হয়। এরপর আস্তে আস্তে সিটি স্ক্যানসহ আধুনিক প্যাথলজি বিভাগও চালু করা হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবার মাসে চালু করা হলো ডায়ালাইসিস বিভাগ। দীর্ঘ ৭ বছরের বেশি সময় ধরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস সুবিধা চালু থাকলেও দির্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগে নেই কোনো ওষুধ ও চিকিৎসক। ১৮টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে চালু রয়েছে ৫টি। আর বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে ১৩টি। বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও সেবিকারা দিচ্ছেন মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এতে নতুন করে শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কিডনি রোগীরা। ফলে আর্থিক সংকটে থাকা এসব রোগীদের চিকিৎসা নিতে হিমশিম খাচ্ছে। একাধিক রোগীর স্বজনরা বলেন, আমরা জানি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়। তবে এখানে এসে কি চিকিৎসা পাচ্ছি? বাইরে থেকে ওষুধপত্র কিনে এনে দিলে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। একটা সিরিঞ্জও নেই এখানে। বাইরে থেকে সিরিঞ্জ কিনে দিলে নার্সরা সেটা ব্যবহার করছেন। স্বজনরা আরো বলেন, ১৮টি মধ্যে ১৩টা ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট। এজন্য রোগীদের অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেড়ে যায়। এখানে কিডনি রোগীদের ক্যান নেই, পার্শ্ববর্তী ফার্মেসিতে টাকা জমা দিলে সেখান থেকে ক্যান সরবরাহ করা হয়। তারপর সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্সরা। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সেবিকারা ডায়ালাইসিস ইউনিটের নানা সংকটের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল জানান, বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে আনার পর রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও সেবিকারা দিচ্ছেন মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। তিনি আরো জানান, বার বার বলার পরও হাসপাতালের পরিচালক অচল মেশিন সচল করার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী জানান, বাজেট পেলে ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে বিকল হওয়া মেশিনগুলো মেরামত করা হবে। তবে সেক্ষেত্রে সময় লাগবে।