নওগাঁয় রঙিন ফুলকপি চাষ করে খরচের পাঁচ থেকে ছয় গুণ লাভ করেছেন চাষি জালাল হোসেন। এটিই জেলায় প্রথমবার বাহারি রঙের ফুলকপি চাষের সফলতা। এতে এলাকার অন্য কৃষকদের মধ্যে রঙিন ফুলকপি চাষে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের কসবা গ্রামে বাড়ির পাশে ১২ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করছেন জালাল। বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। প্রতিদিনই হলুদ, বেগুনি রঙের ফুলকপি দেখতে ও কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রঙিন ফুলকপি কম খরচ ও কম পরিশ্রমে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। চারা রোপণের ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই এ কপি বিক্রি করা যায়। একেকটি কপির ওজন হয় প্রায় দুই কেজি। জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বদলে ব্যবহার করা হয় জৈব সার ও ফেরোমন ফাঁদ। এছাড়া সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ বেশি। বাজারে চাহিদাও বেশি। দেখতে সুন্দর এ কপি অর্ধসিদ্ধ করেই খাওয়া যায়। আগামীতে রঙিন ফুলকপি চাষ অনেকটাই বাড়বে বলে আশাবাদ উপজেলার কৃষি বিভাগের। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে, নওগাঁয় প্রথমবার জালাল হোসেন বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ তৈরি করেছেন তিনি। সাধারণ ফুলকপি যেখানে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে এটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এ রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, এন্টি-অক্সিডেন্টসহ মানবদেহে উপকারী বিভিন্ন উপাদান আছে। জালাল হোসেন জানান, গত বছর কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে ভিডিও ফুটেজে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখে সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। প্রথমবারের মতো ১ হাজার চারা এনে জমিতে রোপণ করেন তিনি। জালাল আরো জানান, ১২ শতক জমিতে দুই রকমের ফুলকপি চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। প্রতি পিস কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দামে বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার মতো কপি বিক্রি করেছি। জমিতে আরো যে পরিমাণ ফুলকপি আছে, তা বর্তমান বাজার দরে আরো ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে। ৮ হাজার টাকা খরচ করে ৪৫ হাজার টাকার রঙিন ফুলকপি বিক্রি করতে পারব।