ঢাকা ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন : তিনগুণ আয়ের স্বপ্ন

ভালোবাসার মাসে গাইবান্ধার ফুলচাষিদের মুখে হাসি

ভালোবাসার মাসে গাইবান্ধার ফুলচাষিদের মুখে হাসি

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরকে সবাই চেনে ফুলের উপজেলা হিসেবে। ওখানকার বিভিন্ন ইউনিয়নে অর্ধযুগ ধরে ফুলচাষে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। তাদের সারা বছরের ফসল হিসেবে ফুল বিক্রির অন্যতম মাস ফেব্রুয়ারি। এ মাসে ‘রোজ ডে’ থেকে শুরু করে উদযাপন হয় বিভিন্ন দিবস। আর এসব দিবসে বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। ফুলপ্রেমিদের এই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারিতে তিনগুণ আয়ের স্বপ্ন দেখছেন প্রান্তিক কৃষক। সাদুল্লাপুর উপজেলার কাঁঠাল লক্ষ্মীপুর, আমবাগান, তাজনগর, খোর্দ্দ কোমরপুর, রাঘবেন্দপুর, পশ্চিম দামোদরপুর ও চকনদীসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ফুলচাষিদের ব্যস্ততা। এসব স্থানে দিগন্তজুড়ে নজর কাড়ছে হরেক ফুলের সমাহার। সরেজমিন দেখা গেছে এরই মধ্যে ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে এলাকা। আসছে বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, মাতৃভাষাসহ বিভিন্ন দিবস। এ উপলক্ষ্যে চাষিদের খেতে শোভাবর্ধনে দুলছে নানা জাতের ফুল। আর এই ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশ এলাকায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাদুল্লাপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে নানা ধরনের ফুল। বিশেষ করে ইদিলপুর ইউনিয়নের তাজনগরসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠ এখন অর্থকরী ফসল হিসেবে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, গাধাসহ অন্যান্য ফুলচাষ করা হচ্ছে। সারা বছরের ফসল হিসেবে বেশ লাভজনক হওয়ায় ফুলচাষেই অধিক মাত্রায় ঝুঁকে পড়ছেন এখানকার কৃষক। সরেজমিন দেখা গেছে, চকনদী গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান তার দেড়বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, গাধাফুল চাষ করেছে। তিন বছর ধরে ফুলচাষে অর্থনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। এর ফলে আগামী বছর নতুন করে আরও বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তিনি।

তাজনগর গ্রামের কৃষক শাহীন মিয়া ফুল উৎপাদন করে আসছেন কয়েক বছর ধরে। নিজ জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল উৎপাদন করছেন তিনি। তার উৎপাদিত ফুলের মধ্যে রয়েছে, রজনীগন্ধা, ডালিয়া, গোলাপ, সূর্যমুখী, গাধা, জারবারা (ইন্ডিয়া)। এ থেকে অনেকটাই লাভবান তিনি। তার এই সাফল্যে ওই গ্রামের অন্যান্য কৃষকরাও এ বছর ফুল চাষ করেছে। কাঁঠাল লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আরিফ মিয়া নামের ফুলচাষি জানান, সাধারণত একটি গোলাপ ১০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা প্রতিটি ১২ থেকে ১৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করেন। তবে বিশেষ মৌসুমে যেমন ফেব্রুয়ারি মাসের প্রপোজ ডে, ভালোবাসা দিবস, মাতৃভাষা দিবসসহ, বিভিন্ন দিবসে একটি গোলাপ বাগান থেকেই বিক্রি হয় ১৫ টাকায়। যা দোকানে খুচরা বিক্রি হয় ১৯ থেকে ২০ টাকা দরে। এ মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করে তিনগুণ লাভের স্বপ্ন দেখছেন। তবে কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা পান না বলে জানান এই কৃষক। সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, এ উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফুলের আবাদ হয়ে আসছে। এ থেকে অল্প খরচে অধিক লাভ থাকছে কৃষকদের। তাদের আরও লাভবান করতে সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ইদিলপুর ও ধাপেরহাট এলাকার মাটি ফুল চাষে অত্যন্ত উপযোগী। একারণে বেশি ফলন পাওয়ায় ফুলচাষ করে যথেষ্ট লাভবান হতে পারছেন কৃষক। এরইমধ্যে বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে কৃষকরা খেতের ফুলগুলো ম্যাকিং করা শুরু করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত