ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ রাষ্ট্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালন করতে চায়

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ রাষ্ট্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালন করতে চায়

গতকাল রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ হিসেবে ঘোষণায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বানের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়েছে খুলনায়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার সুন্দরবন দিবসে দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ সুন্দরবন সন্নিহিত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে। সুন্দরবন একাডেমির উদ্যোগে এবং খুলনা প্রেসক্লাব, ট্যুর অপারেটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং খুলনা সাইক্লিং কমিউনিটির যৌথ আয়োজনে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস উদযাপন করা হয়। সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদিরের সভাপতিত্বে এবং তছলিম আহমেদ টংকারের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, খুলনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক পূর্বাঞ্চল সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সনি, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসনা হেনা, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. নাজমুস সাদাত। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক ও খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ। ধন্যবাদ জানান সুন্দরবন একাডেমির উপদেষ্টা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ। আয়োজকদের পক্ষে বক্তৃতা দেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. নূর আলম শেখ এবং খুলনা সাইক্লিং কমিউনিটির মোস্তফা কামাল। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মাসাসের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শিলু, নাগরিক নেতা মো. সাবির খান, ইসরাত আরা হীরা, অরবিন্দ মৃধা, বাকি বিল্লাহ, সাংবাদিক গাজী মনিরুজ্জামান, ইয়াসির আরাফাত রুমী, পলাশ চন্দ্র ঢালী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, সুন্দরবনের সুরক্ষায় সুন্দরবন দিবস পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের জন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রী, সচিব এবং বন বিভাগের সাথে অধিপরামর্শ করতে হবে। সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের এই দাবি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া গেলে সামনের বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালিত হবে। সুন্দরবন দিবসে এবারে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়, ‘প্লাস্টিক ও পলিথিনমুক্ত সুন্দরবনের জনপদ’। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্লাস্টিক এবং পলিথিন কোনো অবস্থাতেই নষ্ট হয় না। এটি ভেঙে গিয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আকারে মাইক্রো প্লাস্টিক এবং ন্যানো প্লাস্টিক হিসেবে প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। সুন্দরবনাঞ্চলে এই পলিথিন এবং প্লাস্টিক সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের ঘনত্ব এবং উচ্চতার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জনগণকে সচেতন করা না গেলে শুধু আইন করে প্লাস্টিক ব্যবহার কমান যাবে না। দিবসটি উপলক্ষে ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) খুলনা মহানগরীর লায়ন্স স্কুল মিলনায়তনে সুন্দরবন বিষয়ক চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খুলনা সাইক্লিং কমিউনিটি আয়োজন করে বর্ণাঢ্য সাইকেল র‌্যালির। ২০০১ সালে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে সাফল্য পাওয়া সে সম্মেলনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ। ২০০১ সালের সেই সুন্দরবন সম্মেলনের পরের বছর থেকেই খুলনাসহ সুন্দরবন সন্নিহিত জেলাগুলোয় ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে এই দিবস পালনের কর্মকাণ্ডে সংযুক্ত থাকে সুন্দরবন একাডেমি, বন বিভাগ, বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুন্দরবন সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমীরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত