ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ওসিসহ তিনজনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত

‘বাদীকে খুশি করতে ভার্সিটি ছাত্রের কোমরে রশি বেঁধে আদালতে চালান’

‘বাদীকে খুশি করতে ভার্সিটি ছাত্রের কোমরে রশি বেঁধে আদালতে চালান’

আদালতে দায়েরকৃত একটি মারামারি মামলার বাদীকে খুশি করতে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক ছাত্রকে কোমরে রশি বেঁধে চালান দেয়ার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছসহ তিনজনকে দুই কর্মদিবসের মধ্যে আইনানুগ ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হোসাইন এ নির্দেশ দেন। ওসি ছাড়া অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন কর্তব্যরত কর্মকর্তা এবং পেকুয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রইস উদ্দিন। গতকাল দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) লুৎফর রহমান আদেশের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, আসামির কোমরের কিয়দংশ ঊর্ধ্বে রশি দিয়ে বাঁধার বিষয়ে দুই কর্মদিবসের মধ্যে আইনানুগ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও আসামিকে গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তা এএসআই রইস উদ্দিনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রের নাম হামিম মো. ফাহিম। তিনি চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকে পড়েন। তিনি পেকুয়ায় একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন এবং শিক্ষকতা করেন। গত শনিবার রাতে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একটি মারামারি মামলার পরোয়ানায় ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর গত রোববার পেকুয়া থানা-পুলিশের একটি দল কোমরে রশি বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফাহিমের আইনজীবী মিজবাহ উদ্দীন বলেন, ফাহিমকে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে নেয়ার ঘটনায় প্রকাশিত বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার সংবাদ মঙ্গলবার আদালতের নজরে আনা হয়। আদালত এ সময় দুই কর্মদিবসের মধ্যে পেকুয়া থানার ওসিসহ তিনজনকে আইনানুগ ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেন।

আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, শুনানীকালে আসামি পক্ষের কৌঁসুলী আলোচ্য আসামির গ্রেপ্তার-পরবর্তী সময়ে আসামির পাশে দাঁড়ানো পুলিশসহ আসামির হাতে হ্যান্ডকাপ ও কোমরের কিয়দাংশ ঊর্ধ্বে রশি দিয়ে বাঁধা স্থিরচিত্র সম্বলিত সংবাদ প্রকাশের একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার মূল কপি আদালতে দাখিল-পূর্বক গ্রেপ্তারকৃত আসামির কোমরের কিয়দাংশ ঊর্ধ্বে রশি দিয়ে বাঁধার বিষয়ে আদালতের কাছে আইনানুগ আদেশ প্রার্থনা করেন।

অভিযোগ উঠেছে, মামলার বাদীকে খুশি করতে ওয়ারেন্ট তামিলকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্রিষ্টরা বাদীর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে সামান্য একটি মারামারি মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্রকে কোমরে রশি বেঁধে চালান দেন।

গতকাল দুপুরে ওয়ারেন্ট তামিলকারী কর্মকর্তা ও পেকুয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রইস উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখনো আদালতের আদেশ পায়নি। আপনার মতো অন্য গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকেও বিষয়টি শুনেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, শুধু মাত্র ওয়ারেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিকে ধরেছি আমি। আদালতে নেয়ার সময় আমি ছিলাম না। তবে বাদীকে খুশি করতে সুবিধা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

গতকাল দুপুরে সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এম. এম. রকীব উর রাজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালতের আদেশের বিষয়টি শুনেছি। একই সাথে বিষয়টি এসপি স্যার’কে অবগত করেছি। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত তিনি কোনো ধরনের লিখিত নির্দেশনা পাননি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত