ভোমরা বন্দরের জিরো পয়েন্ট
ভারতীয় ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিলেন ব্যবসায়ীরা
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্টে ভারতীয় আমদানিজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম, ওহিদুল ইসলাম, সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সাবেক সহ-সভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে সাধারন ব্যবসায়ীরা বন্দরের জিরো পয়েন্টে গিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কর্মচারীকে চাঁদা আদায় করতে নিষেধ করেন। কিছু সময় ব্যবসায়ী নেতারা জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করে চলে আসেন। এর আগে মঙ্গলবার ও বুধবার বিকালে বিকালে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে এই চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়। এ সময় চাঁদা আদায় কাজে নিয়োজিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মচারীর কাছ থেকে কিছু ভারতীয় রুপি উদ্ধার করা হয়। গত বছর জুন মাস থেকে ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নামে ট্রাক প্রতি ২০০ রুপি হারে চাঁদা আদায় শুরু হয়।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চালের সম্ভাবনাময় ভোমরা স্থলবন্দরে বিভিন্ন খাতে চাঁদাবাজির বিষয়টি ওপেন সিক্রেট ছিল। কিন্তু গত গতবছর ৩০ মে ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্মারক নং সম্বলিত চিঠি দিয়ে ভারতীয় আমদানিজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ২০০ রুপি হারে চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ধরনের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ভোমরার এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করে। গত বছর ২১ জুন তারিখ থেকে বন্দরের জিরো পয়েন্টে বসে ভারতীয় ট্রাক থেকে ২০০ রুপি হারে চাঁদা আদায় শুরু করলে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভাররা প্রায় ৩ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একপর্যায়ে আমদানিকারকরা ট্রাক প্রতি ২০০ রুপি হারে চাঁদা দিতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে ভারতীয় ঘোজাডাঙ্গা বসিরহাট ট্রান্সপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ওই দেশের বিভিন্ন দপ্তরে ভোমরা স্থলবন্দরে চাঁদাবাজির বিষয়টি উল্লেখ করে অভিযোগ দাখিল করে। ভোমরাস্থ আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে সাতক্ষীরা সদর আসনের নবাগত সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু ভোমরা স্থলবন্দরের অনিয়ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জঞ্জালমুক্ত করার ঘোষণা দিলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা কিছুটা মনোবল ফিরে পান, যার ফলশ্রুতিতে বুধবার বিকালে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বন্দরের জিরো পয়েন্টে গিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মচারীকে চাঁদা আদায় করতে নিষেধ করেন। কিছু সময় ব্যবসায়ী নেতারা জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করে চলে আসেন। প্রসঙ্গত, ট্রাকপ্রতি ২০০ রুপি হারে প্রতিদিন প্রায় ২০০ আমদানিজাত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৪০ হাজার রুপি। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা ভারতীয় ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করা হলেও এই অর্থ কোথায় যায়, তা কেউ জানে না। অভিযোগ ওঠে ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই বিপুল পরিমাণ টাকা চাঁদাবাজি করে তা আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যাপারে সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দেলোয়ার রাজু জানান, সংগঠনের সিন্ধান্ত অনুযায়ী ভারতীয় ট্রাকপ্রতি কিছু টাকা তোলা হতো। তবে সেই টাকা কেউ আত্মসাৎ করেননি।