রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম এবং ঢাকার সাভার এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং ‘ল্যাংরা নুরু’, ‘পটোটো রুবেল’ ও ‘কিং শাওন’ গ্রুপের লিডারসহ ২১ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৪।
আটকরা হলেন- শাহ আলম ওরফে ল্যাংরা নুরু ও জমির, মো. জাহিদুল ইসলাম রানা, মো. আল-আমিন, মো. ফারুক প্রামাণিক, মো. সোলাইমান, মো. লালন রানা, মো. ইমন ওরফে ফ্লাস ইমন, মো. উমর ফারুক, মো. ইয়ামিন, মো. শাওন খাঁন, মো. সোহান বেপারি, মো. শাওন, নুর ইসলাম, আলামিন, আব্দুল মান্নান, মো. আজিম, পিয়াস হোসেন, মো. রাকিবুল ইসলাম, মো. সজিব হোসেন ও মো. আলামিন।
গত বৃহস্পতিবা রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর থানা এলাকা থেকে ‘ল্যাংরা নুরু’ গ্যাংয়ের ৫ সদস্যকে, দারুস সালাম থানা গাবতলী এলাকা থেকে ‘পটোটো রুবেল’ গ্রুপের ৭ জন সদস্যকে, ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন গেন্ডা এলাকা থেকে ‘কিং শাওন’ গ্রুপের ৯ জন সদস্যকে আটক করা হয়।
গতকাল দুপুরে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর, দারুসসালাম, পল্লবী, শাহ আলী এলাকায় বেশ কিছু কিশোরগ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তন্মধ্যে ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটোটো রুবেল’ এর লিডারসহ ৭০-৮০ জনের সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এ গ্যাংয়ের সদস্যরা মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, ভাষানটেকসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক সেবন ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চিহ্নিত এসব বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অত্যাচারে বাসস্ট্যান্ডে আসা দূর-দূরান্তের যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ ও অসহায় হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের লিডার ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটেটো রুবেল’ এর সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন বাস-ট্রাকে চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করে আসছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বাস-ট্রাকের গতিরোধ করে চালকদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালকদের গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাছাড়াও ফুটপাতের দোকানদাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের মারধর করে। ‘ল্যাংরা নুরু’ গ্রুপের লিডার শাহআলম ওরফে ল্যাংরা নুরুর বিরুদ্ধে মিরপুর, কাফরুল ও শেরেবাংলা নগর থানায় মারামারি এবং খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত ৫টি মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা চিহ্নিত কিশোর গ্যাং ‘কিং শাওন’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং সাভার ও আশুলিয়ায় মাদক বহনসহ চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং এমনকি অপহরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। উঠতি বয়সের এসব কিশোরদের দৈনন্দিন অপকর্মের কারণে এলাকাবাসী আতঙ্কিত ছিল। আটক পরবর্তীতে তাদের সার্বিক বয়স ও শিক্ষার্থী বিবেচনায় সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যাশায় নিজ নিজ পরিবারের কাছে অঙ্গীকারনামার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়। আটক কিশোর অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।