সুসংবাদ প্রতিদিন

কেশবপুরে বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষে লাভবান কৃষক

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে বরইয়ের আবাদ। এ বছর প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের সৃষ্টি না হওয়ায় এবং অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করায় কুল চাষের বাম্পার ফলন হয়েছে। কুল চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষক আবুল বাসার। ভাগ্য খুলেছে তার। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলার ২০ হেক্টর জমিতে কুল ও বরই চাষ হয়েছে। বাজার এবং চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী এবার ৩০ হেক্টর জমিতে বরই এবং কুলের আবাদ হয়েছে। কেশবপুরে অনুকূল পরিবেশ এবং কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায় বলে এ অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষকরা কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এছাড়া এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মৎস ঘেরের মালিকরা ঘেরের পাড়ে কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। নতুন করে কেউ বাগান করতে চাইলে উন্নত জাতের কুল ও বরইয়ের চারা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতা প্রদান করবে। এলাকার চাষিরা বলেন, এ বছর উপজেলার চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে বরই এবং কুলের আবাদ হয়েছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে বরইয়ের আবাদ। এ অঞ্চলে আপেল কুল, বাউকুল, বল সুন্দরী কুলের চাষের প্রচলন ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে টক বরইয়ের চাহিদা বেড়েছে। নতুন করে কেউ বাগান করতে চাইলে উন্নত জাতের কুল ও বরইয়ের চারা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন কুল চাষিরা। কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা গ্রামের নতুন উদ্যোক্তা কুল বাগান মালিক মো. আবুল বাসার জানান, গত বছর মাত্র ১ বিঘা জমি লিস/বরগা নিয়ে কুল চাষ করি। গত বছর কুল বিক্রি করেছি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তবে খরচ হয়েছিল সব মিলে ২৫ হাজার টাকা। এবার এরই মধ্যে ২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছি। এখনো খেতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার কুল রয়েছে। কুলের জমিতে গোবর সার ও রাসায়নিক সারের সঙ্গে চার থেকে পাঁচ বার পানি দিতে হয়। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কুলের ফুল আসার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। কৃষক আবুল বাসার আরো বলেন, মাত্র ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ২ বছর আগে কুলের বাগান করেছেন। এবার সার, পানি, গোবরসহ সবমিলিয়ে ১০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। ২ বছরে সব মিলে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করেছেন। গত বছর এবং এ বছর মিলে মোট প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি কুল বিক্রি করেছেন। এতে ২ বছরে লাভ পেয়েছেন ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, তার সফলতা দেখে এই এলাকা ছাড়াও অন্যান্য গ্রামের চাষিরা নিজ উদ্যোগে কুলবাগান করছেন। তবে তিনি আক্ষেপের সাথে বলেন, মূলধন কম থাকায় আমি বেশি জমিতে চাষ করতে পারছি না। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আমরা এ অঞ্চলের কুল চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।