চট্টগ্রামে জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা
যেসব স্টলে পণ্যের পসরা বেশি সেখানেই ভিড়
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
তামীম রহমান, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চলছে জমজমাট বাণিজ্য মেলা। ৩১তম এ বাণিজ্য মেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম চেম্বার। মেলা ধীরে ধীরে জম উঠছে। নারী পুরুষ শিশু সব শ্রেণির দর্শকের সমাগম বাড়ছে। সকালের দিকে দর্শক কম থাকলেও বিকাল গড়াতেই দর্শক সংখ্যা বেড়ে যায়। টিকিট কেটে মূল মেলায় ঢুকছে নানা বয়সি মানুষ। মনোরম পরিবেশে মেলা অঙ্গনে প্রতিদিন বাড়ছে দর্শক সংখ্যা। আজ অমর একুশে প্রচুর দর্শক সমাগমের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। মেলা শুরুর পর ছুটির দিনে দর্শক সমাগম বেশি হয়েছে। অন্যদিনেও প্রচুর দর্শকের দেখা মেলে। যেসব স্টল ও প্যাভেলিয়নে পণ্যের পসরা বেশি সেখানেই ভিড়। নানা ধরনের খাবারের আইটেম শোভা পাচ্ছে। তান্দুরি চা থেকে আইসক্রিম, আচারের স্টলগুলোতে দম ফেলার ফুরসত নেই কর্মীদের। তবে এখনো স্টল নির্মাণ কাজ চলছে। এসব স্টলে পসরা সাজানো হলে মেলা আরো জমবে বলে মনে করেন স্টলে কর্মরত কর্মীরা। মেলায় ঢুকতেই মার্কসের প্যাভেলিয়ন। গৃহিণীদের ভিড় বেশি এখানে। মার্কস ফুল ক্রিম ২ কেজি ১ হাজার ৬৬০ টাকা হলেও মেলায় ১০০ টাকা ছাড়, ১ কেজিতে ৫০ টাকা ছাড়, ৫০০ গ্রামে ২৯ টাকা ছাড়, ৪০০ গ্রামে ২৫ টাকা ছাড়। ২১৫ টাকার ৫০০ গ্রাম সিলন গোল্ড চা ১৮০ টাকা, ৯০ টাকার সিলন গোল্ড টি ব্যাগ ৭৫ টাকা, ২১০ টাকার ৪০০ গ্রাম ফ্যামিলি ব্লেন্ড ব্ল্যাক টি ১৭৮ টাকা, সঙ্গে ৫০ গ্রাম চা ফ্রি। এখানে পাওয়া যাবে ২০ টাকার কফিও।
প্রবেশ করতেই বঙ্গবন্ধু কর্নারের সঙ্গে চোখ আটকে যায় গাছের চারায়। ব্র্যাক নার্সারি এন্টারপ্রাইজের প্রজেক্টের কর্মকর্তারা বলেন, প্রতি বছরই আমরা স্টল খুলি। আমাদের স্টলে ডেস্ক প্লান্ট, ইনডোর প্লান্ট, সার, কীটনাশক, আছে। সর্বনিম্ন ১০০ টাকায় পেরুভিয়ান ক্যাকটাস যা পলি প্যাকে বিক্রি হচ্ছে। বট গাছের বনসাই আছে। দাম দেড় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। নগরের হালিশহরের ওয়াপদা মোড়ে নিজস্ব জায়গায় স্থায়ী নার্সারি আছে আমাদের। এছাড়া সারা দেশে ১৫টি নার্সারি আছে ব্র্যাকের। সেখানে দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিক্রি হয়। মেলায় নানা আকর্ষণ আছে। দৃষ্টি নন্দন স্টলে চোখ আটকে যায় দর্শকদের। মেলার অন্যতম আকর্ষণ বিদ্যানন্দের বাঁশের তৈরি দোতলা প্যাভেলিয়নটি। মেলার উদ্বোধনী দিন থেকে চালু রয়েছে এটি। এখানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তৈরি পণ্যসামগ্রীর পসরা আছে। দর্শকদের ব্যাপক আগ্রহ এসব শৌখিন জিনিসপত্র নিয়ে। মেলায় ঘুরতে আসা মানুষ ব্যস্ত থাকে এখানকার ছুবি তুলতে।
বিদ্যানন্দের একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, আমরা স্বেচ্ছা শ্রমে এখানে কাজ করছি। কাজের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক নেইনা। আমাদের প্যাভেলিয়নে বিক্রি করা সব টাকা পথশিশুদের খাবারের তহবিলে যাবে। এখানে সর্বনিম্ন ১০ টাকায় একটি মাটির মঙ্গলপ্রদীপের বাটি পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকায় কিছু ছবি বিক্রি করছি আমরা। শীতল পাটির দাম ১ থেকে ২ হাজার টাকা। বান্দরবান থেকে আনা চাকমাদের ফুলবারেং (ছেলে পক্ষ থেকে গয়না ভরে কনের বাড়িতে পাঠনোর পাত্র) ২ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। টপস ও থামি আছে। বই আছে। লাউয়ের থুইয়া (পানির পাত্র) আছে। বেচাকেনা চলছে মিঠাই, আরএফএল, গাজী, কনকা, সেভয় আইসক্রিম, ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স, টেস্টি ট্রিট, ওয়াকার, চাঁদপুরের মৃৎশিল্প, ঢাকা ফুল বাজার, জান্নাত কার্পেট হাউসে। আপন টেক্সে ১ সেট চৈতি প্রিন্ট থ্রিপিস ৪৫০ টাকা, ৩ সেট ১ হাজার ২০০ টাকা। ঢাকা হিজাব ওড়না কালেকশনে ১৫০ টাকায় এলেক্স ও অনলাইন হিজাব বিক্রি হচ্ছে। ফুট ক্লগে ২০০ থেকে ৭৫০ টাকায় ছোট বড় সবার স্যান্ডেল মিলছে। মাহি সু গ্যালারিতে ২০০ থেকে ৬০০ টাকায় স্যান্ডেল কেডস বিক্রি হচ্ছে। লাইবা রুটি মেকার আকার ভেদে ২২৫০, ২৬৫০, ৩২৫০, ৩৫০০ টাকা। মেলায় জমে উঠছে দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের শিশু কর্নারের রাইডগুলো। প্রতিটি রাইডের টিকিট ৫০, ৬০, ১০০ টাকা। মেলায় আসা গৃহিণী হামিদা বানু জানান, মেলার পসরাগুলো চমৎকার। স্কুলে বাচ্চাদের টিকিট দিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। বাচ্চাদের বায়না পূরণ করতেই মেলাতে আসা। আশাকরি শুক্রবারের মধ্যে মেলা জমজমাট হয়ে যাবে। তখন বেচা বিক্রিও বাড়বে।