পাবিপ্রবিতে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া নিয়ে হাতাহাতি
দুই নারী কর্মকর্তা লাঞ্ছিত
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই নারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে এক পক্ষ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন দুই গ্রুপে বিভক্ত। সম্প্রতি একটি গ্রুপ পাস্ট ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের আরেকটি সংগঠন করেন। এ নিয়েই দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। গতকাল সকালে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে দুই গ্রুপ মুখোমুখি হয়। প্রথমে পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন শ্রদ্ধা নিবেদন করে, পরবর্তীতে পুষ্পার্ঘ্য নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে যান নতুন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলীতে বাধা দেন এবং পুষ্পমালা ও ব্যানার ছিনিয়ে নেন পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। এ সময় উভয়পক্ষের উত্তেজিত কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তিতে দুই নারী কর্মকর্তা লাঞ্চিত হন। পরে প্রক্টরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পাস্ট ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জিএম শামসাদ ফখরুল ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ফুল নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে যাওয়ার পর পরই কর্মকর্তা পরিষদের নেতারা বাধা দেন এবং আমাদের ফুলের তোড়া ব্যানার ছিনিয়ে নেন এবং আমাদের দুই নারী কর্মকর্তাকে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি।
অন্যদিকে পাবিপ্রবি কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটিই সংগঠন সেটা হলো পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া কর্মকর্তাদের আর কোনো সংগঠন নেই। একটি পক্ষ প্রায় একই নামে আরেকটি সংগঠন করে কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তারা আমাদের সংগঠনেরই সদস্য। তাদের বলেছি- একই নাম ব্যবহার করে অন্য কোনো নামে সংগঠন না করতে। এসব নিয়েই শুধুমাত্র কথাকাটাকাটি হয়েছে, আর কিছু নয়। হাতাহাতি, ব্যানার ছিনিয়ে নেয়া ও কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করার অভিযোগ মিথ্যা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের দুইটি সংগঠনের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। একই সংগঠনের নামে দুটি সংগঠন হওয়ায় তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে দুই পক্ষই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
পাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, শহীদ মিনারে কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপের একটা ঝামেলা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।