ধর্মীয় উৎসব সবার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করে

বললেন ভূমিমন্ত্রী

প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করছে। যে কোনো ধর্মীয় উৎসব সবার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করে। কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সব সম্প্রদায়ের জনগণকে নিয়ে আমাদের সামনে এগোতে হবে। গতকাল দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বিভাগীয় পুরোহিত ও সেবাইত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) আওতায় হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ডিজিটালে পরিণত হয়েছে। এখন সবাই মিলে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছেন। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে পুরোহিত ও সেবাইতরা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরোহিত ও সেবাইতদের চলতে হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নয় মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এ দেশ আমাদের সবার। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল হাওলাদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- উপসচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়বেদ চৌধুরী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হুসাইন খাঁন ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল। এতে স্বাগত দেন ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর শিখা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি নান্টু রায়, অধ্যাপক নিমাই চন্দ্র রায়, অ্যাডভোকেট শম্ভু নাথ রায়সহ পুরোহিত ও সেবাইতরা বক্তব্য দেন। সম্মেলনে খুলনা বিভাগের আটটি জেলার প্রায় ২০০ জন পুরোহিত ও সেবাইত অংশ নেন। এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে ৪১ হাজার ২১৬ জন পুরোহিত ও সেবাইতদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা বাড়ানো, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা, পুরোহিত ও সেবাইতদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয় যেমন: মাদকাসক্তি, যৌতুক, সন্ত্রাস, পরিবেশ বিপর্যয়রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা এবং উন্নত মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সহায়তা করা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, সামাজিক কুসংস্কার, ইভটিজিং ও বাল্যবিয়ে রোধ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে হিন্দু আইন ও পূজা পদ্ধতি এবং ভূমি আইন ও আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে পুরোহিত ও সেবাইতকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা, খাদ্যপুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও বনায়ন, হর্টিকালচার, গবাদি পশুপালন এবং সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে পুরোহিত ও সেবাইতকে ধারণা দেওয়া এবং পুরোহিত ও সেবাইতদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পাশাপাশি সব ধর্মের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি জাগ্রত করা। বিকালে মন্ত্রী ডুমুরিয়ার পূর্ব বিলপাবলা কালিতলা মন্দিরে মতুয়া সম্মেলন, কালীপূজা অনুষ্ঠান ও কুলটি যজ্ঞ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।