সংবাদে টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের
গুঁড়িয়ে দিল উপকূলীয় বনবিভাগ
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
গত শনিবার দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় ‘উপকূলীয় বন বিভাগ’ কক্সবাজারে ২০০ একর বন দখল করে চিংড়িঘের তৈরির মহোৎসব, জড়িত বন কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ- শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পর টনক নড়েছে উপকূলীয় বনবিভাগের। গতকাল শনিবার কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলী হান্নান মিয়ার ঘোনা নামক স্থানে দখলকৃত চিংড়ি ঘের গুঁড়িয়ে দিয়েছে বনবিভাগ। গতকাল সন্ধ্যায় উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ আবুল কালাম আজাদ ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র মতে, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলী হান্নান মিয়ার ঘোনা নামক স্থানে উপকূলীয় বন বিভাগের আওতাধীন প্রায় ২০০ একর ম্যানগ্রোভ অরণ্য দখল করে চিংড়িঘের তৈরির মহোৎসব চলছে। মাস খানেক ধরে এই প্যারাবন ধ্বংসযজ্ঞ ও বাধ দিয়ে ঘের তৈরি করে আসলেও উপকূলীয় বন বিভাগের রহস্যজনক ভূমিকায় ভাবিয়ে তুলছে পরিবেশবাদীদের। স্থানীয়দের তোপের মুখে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপকূলীয় বনবিভাগ সরেজমিন গিয়ে দায় সারেন।
প্রাপ্ত তথ্য, খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মহেশখালী গোরাকঘাটা রেঞ্জের অধিনে চৌফলদন্ডী বিট অফিসের আওতাধীন পোকখালী ৬নং স্লুইস গেইটস্থ হান্নান মিয়ার ঘোনা নামক ঘেরের পশ্চিমে প্রায় ২০০ একর জায়গা দখল করে বাঁধ দিয়ে চতুর্দিকে ঘেরাও করে রেখেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এ দখল যজ্ঞে কেটে পেলা হচ্ছে হাজার হাজার বাইন, কেওড়াসহ হরেক প্রজাতির গাছগাছালি। পরিবেশ প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি আবাসস্থল হারাচ্ছে ম্যানগ্রোভ অরণ্যে আশ্রয় নেয়া নানান প্রজাতির প্রাণী। সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, হান্নান মিয়ার ঘোনার পশ্চিমে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে মহেশখালী চ্যানেলের সাগরের একটু পূর্বে শত শত শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে বাধ তৈরি করছে। চারপাশে দেশি বিদেশি অস্ত্র দিয়ে পাহারা বসিয়ে বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী। গণমাধ্যম, বন বিভাগ, পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ অন্যন্যা সংস্থার লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এগিয়ে এসে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে জানান কয়েকজন সাংবাদিক। ঘটনাস্থল সাগরের পাশাপাশি হওয়ায় দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে যেতে দুরূহ হওয়ায় সহজে কেউ যেতে চায় না। সেটিকে পুঁজি করে হরহামেশাই দখল যজ্ঞ চলমান রাখে।
গতকাল সন্ধ্যায় অভিযানে নেতৃত্বদানকারী উপকূলীয় বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী বাঁধ গুঁড়িয়ে দেওয়ার সত্যাতা নিশ্চিত করে বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ ফলাও করে প্রচার হওয়াতে ভালো হয়েছে। এতে করে দখলবাজরা ভয়ে থাকবে। তবে যেভাবে প্রচার হয়েছে, সেভাবে দখল হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, বাঁধ গুঁড়িয়ে দেয়ার পর ওই স্থানে স্থানীয়দের নিয়ে একটি সচেতনামূলক সভাও করা হয়েছে। দখলবাজদের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।