সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষকের গুলিতে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় সেই শিক্ষক রায়হান শরিফকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে তার দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১টি গুলির খোসা, চারটি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি বার্মিজ চাকু। ওসি (ডিবি) জুলহাজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, গত সোমবার বিকালে ওই কলেজের ক্লাসরুমে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা চলছিল। এ সময় ফেলের ভয় দেখানো নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে ওই শিক্ষক অস্ত্র বের করে গুলি চালান। এতে কলেজের ফরেনসিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালের পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। রায়হান শরিফ কলেজের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যে পিস্তল দিয়ে শিক্ষার্থীকে গুলি করেছিলেন, সেই পিস্তলও অবৈধ। ওই শিক্ষকের হাতে শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এ সংবাদে পুলিশ ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ওই দিন সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধারের পর রাতেই গ্রেপতার করে থানায় নেয়া হয়। গভীর রাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। মামলাটি দ্রুত তদন্তের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) হস্তান্তর করেন। মামলাটি গ্রহণ করার পর থেকে ডিবি পুলিশ তদন্ত কাজে মাঠে নামে এবং ভোররাতে উদ্ধার করা হয়েছে ওইসব অস্ত্র ও গুলি। পুলিশের এক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তিনি ছিলেন বদ মেজাজি। এ বিষয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। এ তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, গতকাল দুপুরে ওই শিক্ষককের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই হাসপাতাল ক্যাম্পাস এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।