কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে, ভোটের মাঠ ততোই সহিংস হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে গত সোমবার রাতে নগরীর কয়েকটি স্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও গতকাল সকালে বাস প্রতীকের প্রার্থী ডা. তাহসিন বাহার সূচনার পক্ষে নগরীর ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ পাল্টাপাল্টি সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক অভিযোগ করেন। জানা গেছে, নগরীর নতুন চৌধুরী পাড়া এলাকায় সোমবার টেবিল ঘড়ি প্রতীকের পথসভা ও উঠান বৈঠককালে ৩০ থেকে ৩৫ জন সেখানে হামলা চালায়। এ সময় তারা তিন-চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। রাতে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তার নানুয়া দীঘির পাড়স্থ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণে তার তিন কর্মী গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার মালিকানাধীন নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় রেড-রফ ইন হোটেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনি বাস প্রতীকের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন। এ বিষয়ে মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষ থেকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এদিকে একই দিন সোমবার রেইসকোর্স এলাকায় বাস প্রতীকের প্রচারণা চলাকালে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মীদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় বাস প্রতীকের তিন কর্মীকে আহত করার প্রতিবাদে গতকাল সকালে কুমিল্লা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন আহত কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ। এ সময় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমানসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উল্লেখ করেন, ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বাস প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা আড়াল করতে রাতে তার বাসায় সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রদান করেছে। এ ঘটনায় সরকার মাহমুদ জাবেদ বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা দেড়শ জনকে বিবাদী করে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গতকাল বিকালে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন জানান, অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রার্থীদের গণসংযোগ-উঠান বৈঠক :
বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনা ও তার পক্ষে নেতাকর্মীরা নগরীর নেউরা, রাজাপাড়া, আশ্রাফপুর, পদুয়ার বাজার, দক্ষিণ চর্থা, কালিয়াজুড়ি, বালধুম, কাঁটাবিল, মদিনা নগর, রাজেন্দ্রপুর, নোয়াগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক করেন। এছাড়া তার পক্ষে দেবিদ্বার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ইতালী প্রবাসী শাহাদাৎ হোসেন মিঠুর নেতৃত্বে প্রবাসীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে দিনভর গণসংযোগ করেন। মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু ও তার স্ত্রী আফরোজা জেসমিন টিকলিসহ নেতাকর্মীরা নগরীর শুভপুর ও বিষ্ণুপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন। ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার নগরীর রানীরবাজার, পাথুরিয়াপাড়া, মধ্যম আশ্রাফপুর, মনিপুর, টমছমব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন। মেয়র পদে হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম ও তার নেতাকর্মীরা নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন।