মেডিকেল ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. রায়হান শরীফ ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ সাময়িক বরাখাস্ত থাকার সময়ে তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্ত হবেন।
গতকাল দুপুরে ওই কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আমিরুল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের তার অফিস কক্ষে বলেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল ওই শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ যেন কলেজে না থাকতে পারেন। এরই মধ্যে তাকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি এসেছে। এরআগে ওই শিক্ষকের ক্লাশে অস্ত্রবহন ও আচরণ সম্পর্কে তাকে একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে এবং এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া গত সোমবার বিকাল ৫টায় ওই শিক্ষক পিস্তল ও ধারালো ছুরি নিয়ে হঠাৎ করে ক্লাসে ঢোকেন। এ সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালের ডান পায়ের উরুতে গুলি করেন তিনি। এ সময় তার চিৎকারে সবাই এগিয়ে এলে ডা. রায়হান শরীফকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি সিরাজগঞ্জ শহর এলাকার অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। ওইদিন গভীর রাতে আহত ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন এবং ডিবি পুলিশ তার ২টি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১টি গুলির খোসা, ৪টি ম্যাগাজিন, ২টি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করেছে। এসব অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তার বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ আরো একটি মামলা করেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বেলাল হোসেনের আদালতে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই ইব্রাহিম হোসেন। তবে এখনো রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়নি।
গুলিবিদ্ধ আহত শিক্ষার্থীর বাবার দায়ের করা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওই শিক্ষক। ডিবি পুলিশের ওসি জুলহাজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ওই কলেজ ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য পুলিশ মোতায়েন ও টহল অব্যাহত রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা আজ ক্লাশে ফিরবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।