জাতিসংঘ
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি বাড়ছে রেকর্ড হারে
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম অঞ্চলে ইসরায়েলের আবাসন নির্মাণের হার রেকর্ড হারে বাড়ছে। এই বৃদ্ধির হার এতটাই যে ইতোমধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা। গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের হালনাগাদ পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশনের প্রধান কার্যালয় জেনেভা দপ্তরে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় নতুন ২৪ হাজার ৩০০টি হাউজিং ইউনিট বা অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যেই পশ্চিম তীরে শুরু হয়েছে এই প্রকল্পের কাজ, শুক্রবার জমা দেওয়া ১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের পর এই প্রথম পশ্চিম তীরে এত বেশিসংখ্যক অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসরায়েলের সরকার। প্রতিবেদন জমা পড়ার পর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভোলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই নতুন আবাসন প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দখলকৃত এলাকাগুলো থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে ইসরালের জনসংখ্যার বিস্তার ঘটানো। নিশ্চিতভাবেই এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।’
পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনি এবং ইহুদি বসতকারীদের মধ্যে দাঙ্গা-সংঘাত বিরল কোনো ঘটনা নয় তবে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে দাঙ্গা-হাঙ্গামার হার। দুই পক্ষের সংঘাতে গত ৫ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি। এ ইস্যুতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। আইডিএফ বলেছে, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা থেকে ‘শিক্ষা নিয়ে’ গত কয়েক মাস ধরে পশ্চিম তীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে আইডিএফ এবং ইসরায়েলি পুলিশ। সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন এই চার শতাধিক ফিলিস্তিনি।
গত বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে ভোলকার তুর্ক বলেন, ‘গত ৫ মাসে পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি এবং ইহুদি বসতকারীদের মধ্যকার সংঘাত এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং এটি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যাবতীয় সম্ভাবনা শেষ হয়ে যেতে বেশি দিন লাগবে না।’ এদিকে প্রতিবেদনটি জমা পড়ার পর জেনেভায় জাতিসংঘের ইসরায়েলি মিশনের সদস্যরা পাল্টা এক বিবৃতিতে মানবাধিকার কমিশনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে বলেছে, ‘গত ৫ মাসে ফিলিস্তিনিরদের হামলায় পশ্চিম তীরে ৩৬ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। কমিশনের প্রতিবেদনে তার কোনো উল্লেখ নেই।’