জাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ সাব্বির আলমের অপসারণসহ পাঁচ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের চারটি ফটকে তালা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’র সদস্যরা। অবরোধের সময় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এদিকে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহাসহ কয়েকজন কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে এলে বাধার মুখে পড়ে স্থান ত্যাগ করেন তারা। এ ব্যাপারে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রশাসন তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের এমন একটা মনোভাব যে প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবন অচল হয়ে যাবে তবুও অপরাধী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। ‘যে নিপীড়নের কারণে একজন শিক্ষক (মাহমুদুর রহমান জনি) বরখাস্ত করা হয়েছে সেই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দায়মুক্তি পত্র লেখানোর অভিযোগ রয়েছে প্রক্টরের বিরুদ্ধে। তারপরও প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে বোটানিক্যাল গার্ডেনে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে ঘটনার রাতেই আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা। এছাড়া নিপীড়কদের ‘সহায়তাকারী’ প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা এবং তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্ণিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও রয়েছে আন্দোলনকারীদের।