ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ এর দ্বিতীয় প্রকৌশলী খুলনার মো. তৌফিকুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে ঘটনা জানার পর থেকে দুশ্চিন্তা কাটছে না তাদের। পরিবারের দাবি, দ্রুত সবাইকে ভালোভাবে ফিরিয়ে আনার। জিম্মি মো. তৌফিকুল ইসলাম খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন ২০/১ করিমনগর এলাকার মো. ইকবাল এবং দিল আফরোজা দম্পতির ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। গতকাল সকালে তৌফিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা মো. ইকবাল বিমর্ষ মুখ নিয়ে নিউমার্কেটে তার মোবাইল ফোনের দোকানে যাচ্ছেন। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই কানে আসে কান্নার আওয়াজ। দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন তৌফিকুলের স্ত্রী জোবাইদা নোমান। জোবাইদা নোমান বলেন, মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আমার স্বামী আমাকে ফোন করে দুপুরে তাদের জিম্মি করার কথা জানায়। সে তার বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের দাবি দ্রুত যেন আমার স্বামীসহ সবাইকে উদ্ধারে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আমি আমার স্বামীকে দ্রুত ফিরে পেতে চাই। আমার স্বামী কী অবস্থায় আছে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছি। ২০০৮ সাল থেকে আমার স্বামী জাহাজে চাকরি করলেও এ ধরনের বিপদে এই প্রথমবার পড়েছে। তৌফিকের মা দিল আফরোজা বলেন, ছেলেকে জিম্মি করার কথা শোনার পর তাকে কয়েকটি দোয়া পড়ার কথা বলি। তখন সে আমাদের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। কথা বলার একপর্যায়ে জলদস্যুরা তার ফোন কেড়ে নেয়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কথা বলতে পারিনি।
গত ২৫ নভেম্বর সে বাড়ি থেকে চট্টগ্রামে ওই জাহাজটিতে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। জানি না সে কী অবস্থায় আছে। আমাদের দাবি, শুধু আমার ছেলে না, সবাইকে দ্রুত সুস্থভাবে-ভালোভাবে উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হোক। তিনি আরও বলেন, ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে অন্তত স্বস্তিতে থাকতে পারতাম। উদ্বেগে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলেসহ ২২ জন বন্দি অবস্থায় আছে। সবাইকে যেন সরকার তাড়াতাড়ি তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে আনে।
এদিকে তৌফিকের ৭ বছর বয়সি মেয়ে তাসফিয়া তাহসিনা ও ৫ বছর বয়সি ছেলে আহমদ মুসাফি বাবার খবর শুনে মঙ্গলবার বিকাল থেকেই কাঁদছে।