বিভিন্ন প্রজাতির কুল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কুল চাষিরা। বাগানের সারি সারি কুলগাছে ধরে থাকা কুল দেখতে যেমন নয়নাভিরাম, আবার ভিটামিন সমৃদ্ধ কুল খেতেও সুস্বাদু। কুল চাষের জন্য কুষ্টিয়ার মাটি অনুকূল হওয়ায় দৌলতপুরসহ জেলার চাষিদের কুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আবার অর্থকরী এ ফলের চাহিদাও রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে।
কুষ্টিয়া জেলায় এবছর প্রায় ২২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির কুল চাষ হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বনসুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি, বাউকুল ও আপেল কুল। বিঘা প্রতি কুল চাষে চাষীদের খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘা জমি থেকে চাষিদের আয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ টাকা বা তারও বেশি। যা অন্যান্য ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এতে বেশ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের আমদহ গ্রামের কুল চাষি রিপন আলী তামাক চাষ না করে বাবার অমতে সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে ১৭০০টি কুল গাছ লাগান। প্রতি গাছ থেকে ২৫ কেজি কুল সংগ্রহ করে তা বিক্রয় করেছেন। আর বছর না যেতেই তা থেকে আয় হয়েছে ৪ লাখ টাকা। এখনও প্রায় সমপরিমাণ আয় হবে। এতে কৃষক রিপন আলীর পাশাপাশি তার বাবাও চরম খুশি। এদিকে বাগান থেকে টাটকা ও সুস্বাদু কুল সংগ্রহ করতে ক্রেতারাও প্রতিদিন ভিড় করছেন রিপন আলীর কুল বাগানে। আবার রিপন আলীর বাগান দেখে কুল বাগান করতে আগ্রহীও হচ্ছেন অনেকে। বাগান থেকে কুল সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রয় করে চাষিদের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন খুচরা ও পাইকার ব্যবসায়ীরাও। এমনটি জানিয়েছেন কুল ব্যবসায়ীরা।
উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কৃষি বাণিজ্যিকরণে অর্থকরী ফল কুলচাষে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাত সরবরাহ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও কারিগরি সহায়তার দেওয়ার পাশাপাশি চাষিদের কুলচাষে আগ্রহী করে তুলতে সবধরণের সহায়তা করছেন কৃষি বিভাগ বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ। অর্থকরী ও লাভজনক ফল কুলচাষ বৃদ্ধি পেলে চাষিদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বিদেশে কুল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।