চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর ঘটনায় নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত ৭ পুলিশ সদস্য এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তারা ভুক্তভোগী ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিককে আটকের পর মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার মোবাইল ফোন থেকে কোটি টাকা সরিয়ে নেয়। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই আদেশ দেন। গতকাল নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) স্পিনা রানী প্রামানিক এই তথ্য নিশ্চিত করেন। সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সদস্য হলেন নগর ডিবির পরিদর্শক রুহুল আমিন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বাবুল মিয়া, শাহপরান, মইনুল হোসেন, কনস্টেবল জাহিদুর রহমান ও আবদুর রহমান। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তাদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১২ মার্চ দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, ১ মার্চ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সংক্রান্তে সিএমপির অফিস আদেশমূলে তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পর্যালোচনান্তে ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) রুহুল আমিনকে ব্যাখ্যা তলব করা হোক এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. আলমগীর হোসেন, এএসআই (নিরস্ত্র) মো. বাবুল মিয়া, এএসআই (নিরস্ত্র) মো. শাহ পরাণ জান্নাত, এএসআই (নিরস্ত্র) মইনুল হোসেন, কনস্টেবল মো. জাহিদুর রহমান, কনস্টেবল আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করতঃ বিভাগীয় মামলা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। প্রসঙ্গত, ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের কুলিং কর্নারে চা পান করার সময় আবু বকর সিদ্দিক নামের ওই ফ্রিল্যান্সারকে আটক করে ডিবি পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল। আবু বকর সিদ্দিকের অভিযোগ, তার হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে মোবাইলের লক খুলেছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ওই রাতে তাকে মনসুরাবাদে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়। এ সময় তার মোবাইল থেকে দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) স্থানান্তর করা হয়েছে। পরে আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে গত ৫ মার্চ আট পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আবু বকরের স্ত্রী হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
