ইসরায়েলি হামলা

ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ ২০ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শুক্রবার ভোরে বলেছে, অবরুদ্ধ অঞ্চলে ত্রাণের জন্য মরিয়া অপেক্ষমাণ গাজাবাসীর ওপর ইসরায়েলি হামলায় ২০ জন নিহত এবং ১৫৫ জন আহত হয়েছে। বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আরো সাহায্য পাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে, যেখানে মধ্যস্থতাকারীরা মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসের জন্য একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পরেও লড়াই চলছে। এরআগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নাগরিকরা উত্তর গাজা শহরের একটি গোলচত্বরে ত্রাণের জন্য জড়ো হয়েছিল। ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে প্রাথমিকভাবে ১১ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হওয়ার হয়েছে এবং এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর গাজার একটি হাসপাতালের জরুরি পরিষেবার পরিচালক মোহাম্মদ ঘুরাব জানান একটি খাবারের ট্রাকের জন্য গোলচত্বরে অপেক্ষামান লোকজনের ওপর ‘দখলদার বাহিনীর সরাসরি গুলি চালিয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা গাজাবাসীদের ওপর গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। এটি একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে কয়েক ডজন গাজাবাসীকে আক্রমণ করেছে বলে রিপোর্টগুলো ভুল।’ জাতিসংঘের সংস্থাগুলো গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

জর্ডান, ইসরায়েল এবং মিশর হয়ে গাজায় সীমিত স্থল প্রবেশাধিকারের কারণে মানবিক জরুরি অবস্থা কিছু দেশকে সাহায্য সরবরাহের জন্য এয়ারড্রপ এবং সমুদ্রপথ ব্যবহার করতে বাধ্য করেছে। স্প্যানিশ সাহায্য জাহাজ ওপেন আর্মস, প্রায় ২শ’ টন খাদ্য নিয়ে মঙ্গলবার সাইপ্রাস ত্যাগ করার পর ইসরায়েলের উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছেছে। মেরিন ট্র্যাফিক ওয়েবসাইট গ বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছে। সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনস্টান্টিনোস কম্বোস বলেছেন, দ্বিতীয় আরেকটি বড় জাহাজ সামুদ্রিক করিডোরের মাধ্যমে সহায়তা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং অক্সফামসহ ২৫টি সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমান ও সমুদ্র মিশন স্থল সরবরাহের ‘কোনো বিকল্প নয়’। মারাত্মক অভাবের কারণে সাহায্যের জন্য অনেক ছুটোছুটি হয়েছে। তাদের মধ্যে মোখলেস আল-মাসরি (২৭), যিনি বেইত হানুন থেকে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

মোখলেস আল-মাসরি বলেন, ‘আমাদের বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য কোনো খাবার নেই, কিছু নেই। এমনকি আমরা শিশুর দুধের বোতলও খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা সকাল থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছি, এই আশায় যে একটি বিমান প্যারাসুট নামবে।’

অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, পিয়ার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হলে দিনে দুই মিলিয়নেরও বেশি লোকের খাবারের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হতে পারে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দক্ষিণে রাফাহ আক্রমণ করার প্রতিশ্রুতি বৃহস্পতিবার দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন। যেখানে গাজার বেশিরভাগ জনসংখ্যা আশ্রয় চেয়েছে এবং ইসরায়েল সেখানে স্থল হামলার হুমকি দিচ্ছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের রাফাতে প্রবেশ এবং কাজ শেষ করতে বাধা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে।’

একটি গোয়েন্দা ঘাঁটি পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘আমি চাপ প্রত্যাহার করতে থাকব এবং আমরা রাফাতে প্রবেশ করব এবং ইসরায়েলের জনগণকে সম্পূর্ণ বিজয় এনে দেব।’ প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি মিশরের সঙ্গে গাজার দক্ষিণ সীমান্তে রাফা এবং এর আশপাশে আশ্রয় চেয়েছে।