ছুটির দিনে রাজধানীর বাজারদর
বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
অনেক দিন ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মাঝেমধ্যে দাম কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানেই তা আগের অবস্থায় ফিরে যায়? সরকার দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানার কথা বললেও বাস্তবে এর প্রতিফলন কম। রমজান মাসেও খুব একটা পাল্টায়নি বাজারের পরিস্থিতি। প্রায় সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। জিনিসপত্রের লাগামহীন দামে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে মানুষ দিশেহারা। রমজানের আগের সপ্তাহে সবজিসহ মুদি দোকানের পণ্য যে দামে বিক্রি হচ্ছিল, গতকালও তা ছিল অপরিবর্তিত। এসবের মধ্যে অল্প কিছু পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে, আবার কিছু পণ্যের বেড়েছে। রোজা শুরুর আগের বাড়তি দাম আরো বাড়তির দিকেই যাচ্ছে। গতকালকের বাজারে শিম ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, টক টমেটো ৮০ টাকা, সাদা মুলা ৫০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা, ক্ষীরাই ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ১৬০/১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০-৯০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০-১২০ টাকা, সজনে ২০০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০-১০০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয় ৬০ টাকা করে। এক্ষেত্রে দেখা যায় করল্লা, পটল, ঢ্যাঁড়স, কাঁচামরিচের দাম কমেছে। আর গাজর, টমেটো, ক্ষীরাই, ফুলকপির দাম বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য জিনিসের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
এছাড়া গতকালের বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৩৫-৪০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১৫০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ২২০, চায়না আদা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০-২০ টাকা এবং আলুর দাম বেড়েছে আরো ৫ টাকা।
ক্রেতারা বলছেন, আমরা কতদিন এভাবে চলব জানি না। দিন দিন আমাদের খাবারের খরচ বেড়েই চলছে। বেতন পাই কত টাকা আর খরচ করি কত টাকা। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে তো আর বেতন বাড়ে না।
তারা জানান, আগে থেকেই তো দাম বাড়তি। রোজার মধ্যেও শান্তি নেই। বাজারে কোনো জিনিসটার দাম কম কেউ কী বলতে পারবে? যেই সবজিই কিনতে যাই দাম বলে ৮০ টাকা না হয় ১০০ টাকা। আমাদের কী করার আছে?
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি আছে আপাতত। তবে শিগগিরই দাম কমে যাবে। আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম কমেছে, তবে আলুর দাম বেড়েছে। আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমার মনে হচ্ছে আলুর দাম আরো বাড়তে পারে। ৩০ টাকার আলু গতকাল ৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে গতকাল মুদি দোকানের পণ্যের দামও ছিল অপরিবর্তিত। তবে এক লাফে ৪৫ টাকা বেড়ে গেছে খেসারির ডালের দাম। গতকাল ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১৬০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে খেসারির ডাল ছিল ১১৫ টাকা কেজি, গতকাল তা হয়েছে ১৬০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা জানান, খেসারি ডাল এখন বাজারে পাওয়া যায় না বললেই চলে। আর এই ঘাটতির কারণেই দাম বেড়ে গেছে।
এছাড়া মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। গতকাল প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।
এছাড়া গতকালের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৮০০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৬০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কই মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১৩০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, বেলে মাছ ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১০০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১২০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০-৮০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
গতকাল ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০-৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির লাল ডিম ১৩৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১২৫ টাকা প্রতি ডজন দরে বিক্রি হয়।