ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বলিউডের সিনেমা দেখে জাগে অস্ত্রের নেশা

রিমান্ড শেষে কারাগারে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজের সেই শিক্ষক

রিমান্ড শেষে কারাগারে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজের সেই শিক্ষক

সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করা সেই শিক্ষক ডা: রায়হান শরিফের ৫ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। রিমান্ড শেষে গত শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে আবারো তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওসি (ডিবি) ওসি জুলহাজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, ডা. রায়হান শরিফের অবৈধ অস্ত্র রাখার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৫ দিনের রিমান্ড আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতা নানা পাটেকর অভিনীত ‘আব-তাক ছাপ্পান’ সিনেমার দুটি পার্ট একাধিকবার দেখে অনুপ্রাণিত হন এবং অস্ত্রের প্রতি তার নেশা জাগে। তিনি এ সিনেমা দেখেই একাধিক অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা ও অস্ত্রের অনুসন্ধান করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার এক অস্ত্র কারবারির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ওই অস্ত্র কারবারির কাছ থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ও ডিসেম্বর মাসে বিদেশি দুটি পিস্তল ও গুলি ক্রয় করেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশি চাকু ও ছুরি কিনেছেন। শখের বসেই তিনি এসব অস্ত্র কিনেছেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরো কিছু অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করলেও ৫ দিনের রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য মিলেছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ডা. রায়হান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদে যার কাছ থেকে অস্ত্র কিনেছিলেন পেশাদার সেই অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীর তথ্য পাওয়া গেছে। ওই ব্যবসায়ীর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলেও তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ সোমবার বিকেলে ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালে ফেল করানোর ভয় দেখান ওই শিক্ষক। এ নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মারমুখী হয়ে উঠলে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তমালকে পিস্তল দিয়ে পায়ে গুলি করা হয়। এ নিয়ে ওই মেডিক্যাল হাসপাতাল পাড়ায় বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষক উদ্ধার করে এবং ওইদিন বিকেলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার কাছ থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও বেশকিছু বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা দুটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ডা. রায়হান। অস্ত্র মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে এ রিমান্ডে আনা হয়। এদিকে এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ৭ মার্চ স্বাস্থ্য বিভাগ ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত