কারাগারে জন্ম নেওয়া শিশুর মাকে জামিন দিলেন হাইকোর্ট
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা মামলায় কারাগারে যান অন্তঃসত্ত্বা নারী আহিনা খাতুন। কারাগারেই জন্ম দেন এক কন্যা শিশুর। কারাগারেই বেড়ে ওঠা শিশুর বয়স এখন ১১ মাস। শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে কাশেমপুর কারাগারে রয়েছে। সেই মায়ের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মনজুরুল ইসলাম সুমন। এ সংক্রান্ত আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজুরুল ইসলাম সুমন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আদালত। শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মর্মে হত্যা মামলার আসামি ও ওই মায়ের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, শিশুটির মা আহিনা খাতুনের (২৯) গ্রামের বাড়ি নীলফামারী সদরে। তার স্বামী আলী নূর বিশ্বাসের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদি থানায়। গার্মেন্টস কর্মী আহিনা খাতুনের সঙ্গে রিকশাচালক আলী নূর বিশ্বাসের পরিচয় ২০১৮ সালে। এরপর বিয়ে হয় তাদের। এর মধ্যে তারা আশুলিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ২০২২ সালের কোরবানির ঈদের সময় বাড়িতে যান আলী নুর বিশ্বাস। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আরও একটি বিয়ে করেন। আবার ফিরে আসেন আশুলিয়ায়।
হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তির বিষয়ে আইনজীবী বলেন, আহিনা খাতুনের অভিযোগ তার সঙ্গে আলী নূর বিশ্বাস সংসার করতে চাইতেন না। গার্মেন্টসে কাজ করার পর সব টাকা নিয়ে নিতেন, টাকা না দিলে মারধর করতেন। ঘটনার দিন রাতে আলী নুর বিশ্বাস দোকান থেকে একটি বোতল হাতে নিয়ে এসে বলেন, বিষ মেশানো পানি খেয়ে মরে যাবেন তারা। তখন দুই প্লেটে ভাত খাওয়ার প্রস্তুতি নিলে ঘরের বাইরে আহিনা দেখেন আলী নূর ভাতের সঙ্গে কিছু একটা মেশাচ্ছেন। আহিনা সেই ভাত না খেয়ে ফেলে দেন। শেষরাতে আলী নূর বিশ্বাস বঁটি নিয়ে আহিনাকে মারতে গেলে ওই বঁটি কেড়ে নিয়ে পাল্টা আঘাত করেন আহিনা। শব্দ হবে বলে বালিশ চাপা দিয়ে ধরলে মারা যান আলী নূর। এরপর নারাণগঞ্জে পালিয়ে যান আহিনা। আলী নূরের পরিবারকে ফোন দিয়ে জানান সে মারা গেছে। এরপর পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। আহিনাকেও নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে র্যাব। এরপর থেকেই কারাগারে আহিনা।