মেঘনায় বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবি : তিনজনের মরদেহ উদ্ধার
নিখোঁজ ৬, বাল্কহেডসহ আটক তিন
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মো. আল আমিন টিটু, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনায় বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো পুলিশ সদস্য ও তার এক সন্তানসহ আরো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তিন মাঝিকে আটক করেছে নৌপুলিশ। একই সঙ্গে নৌকাটিকে ধাক্কা দেওয়া বালুবাহী বাল্কহেডটিও জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার আলগীর চর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। ভৈরব নৌপুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, আটক তিন মাঝি মাল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে আটকদের নামণ্ডঠিকানা এখন বলা যাচ্ছে না।
বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ উদ্ধার অভিযান চলছে। এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যার ৬টার দিকে ভৈরবের মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী নৌকাডুবে যায়। এ সময় কয়েকজন সাঁতারে প্রাণে বাঁচতে পারলেও স্বস্ত্রীক এক পুলিশ ও তার দুই সন্তানসহ আটজন নিখোঁজ হয়। ঘটনার পরই উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। রাতের অন্ধকারের কারণে ৯টার দিকে উদ্ধার অভিযান থেমে যায়। পরে গতকাল সকাল ৮টা থেকে আবার উদ্ধার অভিযানে নামে বিআইডব্লিউটিএর প্রশিক্ষিত চার সদস্যের ডুবুরি দলসহ ফায়ার সার্ভিসের আরো চারজন। অবশেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তলিয়ে যাওয়া নৌকাটি শনাক্ত করতে সক্ষম হন ডুবুরি দলের সদস্যরা। এর ফলে পানির নিচ থেকে প্রথমেই একটি ব্যাগ তুলে আনেন। পরে একে একে দুটি মরদেহ তুলে আনতে সক্ষম হন তারা। তবে, পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা গেলে এখনও নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সোহেল ও তার এক সন্তান। ট্রলারের মাঝি নাহিদ জানান, ইফতারের কিছুক্ষণ আগে আশুগঞ্জ চর থেকে ২১ যাত্রী নিয়ে ভৈরব ঘাটে কাছাকাছি আসতেই পেছন থেকে বালুবাহী একটি বাল্কহেড ধাক্কা দিলে পর্যটকবাহী নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় অন্য যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন আটজন।
এ বিষয়ে ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন বলেন, পর্যটকবাহী নৌকাডুবি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা উদ্ধার অভিযানে নামি। পরে নৌপুলিশের সহায়তায় এক নারী মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করি। গতকাল আরো দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কিশোরঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, পুলিশ কন্সটেবল সোহেল রানার স্ত্রী মৌসুমি (২৫), মেয়ে মাহমুদা (৭) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। বাকিদের উদ্ধারে চেষ্টা করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দল।