পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
২১ ঘণ্টা পর গজারিয়ায় সুপার বোর্ড কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সুপার বোর্ড নামের টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন একটি বোর্ড তৈরির কারখানার পাটখড়ি মজুত করে রাখা গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ২১ ঘণ্টার পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। সংবাদ সংগ্রহে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই কারখানায় এর আগেও একবার আগুন লেগেছিল, আবারো লাগল বিষয়টি রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছে গজারিয়া উপজেলাবাসী। গতকাল সকাল ৯টার দিকে আগুন পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে গেল রোববার দুপুর একটার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের সিকিরগাঁও এলাকায় টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানার গুদাম ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানান, সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণের খবর শুনে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা। এ সময় ওই কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করেন। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও নিরাপত্তা কর্মীরা কারখানার ভেতর প্রবেশ করতে দেয়নি। সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, ভস্মীভূত বর্জ্য মেঘনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। সাংবাদিক যদি ছবি তোলে তাই তারা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। জানা যায়, ঘটনার দিন সকাল থেকে কারখানার ওই গুদামে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। বেলা ১টার দিকে গুদামে মজুত করা পাটখড়িতে আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে বাতাসের কারণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তারা ব্যর্থ হন। গুদামের পাশেই নদীতে পাটখড়ি বোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। গুদামের আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারগুলোয় পড়লে মালামালসহ ট্রলারও পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। প্রথমদিকে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, এরপর নারায়ণগঞ্জের আরো চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় কুমিল্লা, ঢাকা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের আরো কয়েকটি দল আসে। গতকাল সকাল ৯টার দিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। টিকে গ্রুপের পরিচালক মো. শফিউল আতাহার তাসলিম জানিয়েছেন, কারখানাটিতে ঠিক কি পরিমাণ মালামাল আছে, সেটি তদন্তের পর জানা যাবে। তবে আগুন লাগার এ ঘটনায় বিপুল পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এর আগে ২০১৩ সালেও আগুন লেগেছিল সুপার বোর্ডের এ কারখানায়।
অগ্নিকাণ্ডের স্থান পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার মুঠো ফোনে জানান, গত রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে টানা কাজ শুরু করে। দৃশ্যমান আগুন নিভে গেছে। তবে এ ঘটনায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি এখনো নির্ণয় করা যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মো. মাসুদুল আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মো. মাসুদুল আলম বলেন, ইউএনও, গজারিয়া থানার ওসি, ফায়ার সার্ভিসের একজন এই কমিটিতে রয়েছে।