ঘুষ বা অর্থ, এমনকি কোনো সুপারিশ-তদবির ছাড়াই কক্সবাজারে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন ৫৮ জন। এদের মধ্যে ৫২ জন পুরুষ ও ছয় নারী। গত শনিবার কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। এ সময় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের দেশপ্রেম, সততা, পেশাদারত্ব ও সেবার মনোভাব নিয়ে পুলিশ বিভাগে চাকরি করার আহ্বান জানান তিনি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সেবার ব্রতে চাকরি’ এ স্লোগানে ২৩ মার্চ কক্সবাজার জেলায় শূন্য পদের বিপরীতে শতভাগ মেধা, যোগ্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, কক্সবাজার জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলের ৫৮টি শূন্য পদের বিপরীতে ২৫৪৩ জন শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেও তাদের মধ্যে ১৯৬৯ জন ফিজিক্যাল এনডিউরেন্স টেস্টে (পিইটি) অংশ নেন। সেখান থেকে ৪৯৮ জন লিখিত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ১২০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সর্বশেষ শনিবার ৫২ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারীকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেন কক্সবাজার জেলা টিআরসি নিয়োগ বোর্ড। বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবদুল করিম, রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শাহনেওয়াজ ও কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এসময় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি এর চেয়ে আনন্দ আর কি হতে পারে। আমরা এতটাই খুশি যে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। অথচ আবেদনের শুরুতে আমরা শুনতে পেয়েছিলাম ঘুষ আর তদবির ছাড়া পুলিশের চাকরি হয় না। কিন্তু এটি ভুল প্রমাণ করলেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এজন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা ৫৮ জনকে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন চাকরি পাওয়া পুলিশ সদস্যের কেউই আগে বিশ্বাস করতে পারেননি টাকা ছাড়াও পুলিশ চাকরি হয়। এখন তাদের সেই ভুল ভেঙেছে।
তিনি বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ ছিল আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। আমরা সেটি করে দেখিয়েছি।