লাভের আশায় দুশ্চিন্তায় মালিকরা
ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছে তাঁত শ্রমিকরা
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এস, এম তফিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ
ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁত সমৃদ্ধ এলাকার তাঁতপল্লিতে ব্যস্ততা বেড়েছে। দিনরাতে তাঁত কারখানাগুলোতে খটখটি শব্দে তাঁতপল্লি জমে উঠেছে। আর বিভিন্ন নকশার বাহারি শাড়ি ও লুঙ্গি তৈরি করছে তাঁত শ্রমিকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে তাঁত সমৃদ্ধ শাহজাদপুর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ তাঁতের কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা। এ জেলায় হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুমসহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৪ লাখ তাঁত রয়েছে। এ কারখানায় জড়িত রয়েছে কয়েক লক্ষাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে তাঁতের শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি ও ব্যবসার জমজমাট হয়ে ওঠে। এ উপলক্ষ্যে এখন তৈরি হচ্ছে- জরি, তোষা, জামদানি, কটন জামদানি, হাফ সিল্ক, কাতানসহ বিভিন্ন নকশার বাহারি শাড়ি ও লুঙ্গি। এসব নানা ডিজাইনের শাড়ি লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন হাট-বাজারে এবং ব্যবসায়ীরা এসব ডিজাইনের শাড়ি-লুঙ্গি ক্রয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। এছাড়া এ অঞ্চলের উৎপাদিত শাড়ি ও লুঙ্গি দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। তবে স্থানীয়ভাবেই বিশেষ করে প্রতিটি বাহারি শাড়ি সাড়ে ৭০০ থেকে ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার কাপড়ের চাহিদা কম। এ ছাড়া রং, সুতা ও বিভিন্ন কাঁচামালের দাম বাড়ায় শাড়ি-লুঙ্গি তৈরির খরচ বেড়েছে। এতে লাভের আশা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মালিকরা। স্থানীয় তাঁত মালিকরা জানান, গত বছর এ মৌসুমে ভালো ব্যবসা হয়েছে এবং এবারো চাহিদা রয়েছে অনেক। তবে গত বছরের চেয়ে এবার কিছুটা কম। শ্রমিকরা দিন-রাত কাজ করছে এবং তারা বাহারী রঙ্গের শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি করছে। তবে এরমধ্যেই রং ও সুতাসহ কাঁচামালের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অনেক তাঁত লাভের আশায় ঋণ করে এ ব্যবসা করছে। উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলেও লাভের আশা ছাড়ছি না। এদিক তাঁত শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কাজের তুলনাই বেতন কম। সপ্তাহের মজুরি দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। অন্যকাজ না থাকায় এ কাজই করতে হচ্ছে। যে কারণে অনেক তাঁত মালিক সুবিধাও পাচ্ছেন। জেলা হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বলেন, এ জেলায় প্রায় ৪ লাখ তাঁত রয়েছে। এসব তাঁতে বাহারি শাড়ি ও লুঙ্গি উৎপাদন করা হয়। বিশেষ করে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু গত বছরের চেয়ে এবার কিছুটা কম সাড়া পাচ্ছি। তবে বিভিন্ন মার্কেটে শাড়ি-লুঙ্গি বিক্রি কিছুটা জমজমাট হয়ে উঠছে। এদিকে রং, সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপড়ের উৎপাদনের খরচও বেড়েছে। এ কারণে বাজারেও তার মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।