জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টি, জোয়ারের পানি ও লবণাক্ত পানিতে প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হতো ভোলার চরাঞ্চলের কৃষকদের সবজি। তবে এ বছর কৃষকরা ক্ষতি থেকে ফসলকে রক্ষার জন্য দলবদ্ধ হয়ে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে সবজির খেতে সব রকমের বিপদের পাশাপাশি রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই। খেতে ব্যাপক ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন মাঝের চর ও দৌলতখান উপজেলার বিচ্ছিন্ন মদনপুর চরে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরই তারা এ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আসছেন। কিন্তু প্রতি বছরই বৃষ্টি, জোয়ার ও লবণাক্ত পানি হানা দেয় সবজি খেতে। এতে প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন তারা। তবে এ বছর সেই ক্ষতি থেকে রক্ষায় দুই চরে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন তারা। সদরের মাঝের চর গ্রামের কৃষক মনির হোসেন ও মো. হারুন, দৌলতখানের মদনপুরের কৃষক মো. ইউসুছ, মো. সিদ্দিক ও বেলাল হোসেন জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষায় দুই চরের কৃষকরা পৃথক পৃথকভাবে দলবদ্ধ হয়ে জমিতে বাঁশ, লাঠি, নেট নিয়ে উঁচু মাচা তৈরি করেছেন। মাচার নিচে মাটি উচুঁ করে তার মধ্যে চাষ করেছেন চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, শসা, লাউ, কুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। নতুন এ মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষের ফলে বৃষ্টি, জোয়ার ও লবণাক্ত পানি খেতে প্রবেশ করতে পারে না। পানি খেতে প্রবেশ করলেও উঁচু মাচা থাকায় ফসলের ক্ষতি হয় না। তারা জানান, মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করায় খেতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় কম খরচে বেশি ফলন পাচ্ছেন তারা। খেতে ব্যাপক ফলন হওয়ায় বেশি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে খেতে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম। তাই কম খরচে বেশি ফলন হওয়ায় লাভবানও হচ্ছেন কৃষকরা। দলবদ্ধ কৃষকদের সফলতা দেখে আগামী বছর অন্য কৃষকরাও দলবদ্ধ হয়ে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করবেন। এতে জেলায় বাড়বে সবজি চাষ। কৃষকদের সফলতার জন্য কৃষি বিভাগ সব সময়ই পাশে আছে।’