সারা দিন রোজার পর ইফতারে ইসবগুলের ভুসির শরবত আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। রোজা রাখার কারণে শরীরের নিস্তেজ ভাব দূর করতে সাহায্য করে এটি। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন তারা ইসবগুলের ভুসির শরবত খেতে পারেন। এছাড়া হজমসহ পেটের নানা সমস্যা থেকে বাঁচতে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে থাকেন রোজাদাররা। রোজা রাখলে অনেকের প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয়। ইসবগুলের ভুসি খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমবে এবং ইউরিনের রং স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হাতে, পায়ে জ্বালাপোড়া ও মাথা ঘোরা রোগে আখের গুড়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিলিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া রোজায় সুস্থ থাকতে ইফতারে খেতে পারেন ইসবগুলের ভুসির শরবত। চলুন জেনে নিই ইসবগুলের উপকারিতা সম্পর্কে-
কালেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে : শরীরের সুস্থতার জন্য কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খেলে তা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসবগুলের ভুসিতে হাইগ্রোস্কোপিক উপাদান রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে খাদ্য থেকে কোলেস্টেরল শোষণেও বাধা দেয় ইসবগুল।
ওজন কমাতে সাহায্য করে : ওজন কমানোর জন্য ইসবগুলের ভুসির শরবত খুব উপকারি। কারণ এর শরবত খেলে তা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। যে কারণে বারবার ক্ষুধা লাগে না এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ভয়ও থাকে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। ইফতারে ইসবগুলের শরবতের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে চিনির বদলে মধু মেশাতে পারেন। এতে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
কোষ্ঠকঠিন্য দূর করে : কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট কেমন তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। পেট পরিষ্কার না হলে তার প্রভাব শরীরজুড়েই পড়ে। এমনকি অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ সমস্যায় আপনাকে আরাম দেবে ইসবগুল। ইফতারের আগে এককাপ ঠান্ডা বা হালকা গরম পানিতে ইসবগুল ভিজিয়ে রাখুন। এরপর তাতে সামান্য চিনি মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খাবেন। এভাবে খেলে রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রস্রাবে সমস্যা দূর করে : গরমের সময় এমনিতেই অধিক পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন, কিন্তু রোজা রাখার জন্য দিনের বেলায় পানি পান করা সম্ভব হয় না। যে কারণে অনেকেরই প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রস্রাব হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা কিন্তু আরও অনেক অসুখের কারণ হতে পারে। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি। আপনার প্রস্রাব যদি হলুদ হয়ে যায় অথবা প্রস্রাবের সময় বা পরে জ্বালাপোড়া হয় তাহলে নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি প্রস্রাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। আমাশয় থেকে রক্ষা করে : ইসবগুল আমাশয় রোগের জীবাণু নষ্ট করতে পারে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাশয় রোগের জীবাণু পেট থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ইসবগুল। সেহরি এবং ইফতারে ইসবগুলের শরবত খেলে আমাশয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।