তাঁতী সমিতির সিন্ডিকেট ভেঙে দিলেন মন্ত্রী

এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

‘সিন্ডিকেটে ডুবছে তাঁত শিল্প‘ শিরোনামে গত পহেলা ফেব্রুয়ারি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের নির্দেশে তদন্ত সাপেক্ষে গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতি পরিচালনায় গঠিত এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল করা হয়। গত সোমবার পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়োর জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতি পরিচালনার জন্য ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যা ২০২৩ সালে পুনরায় আরও দুই বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়। বিধিবর্হিভূতভাবে কমিটির নিয়োগ, কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এডহক কমিটি বাতিল করা হয়।

তাঁতী সমিতি বিধিমালা-১৯৯১ এ তাঁতী সমিতির গঠন ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলো বর্ণনা করা আছে। বিধিমালার দ্বিতীয় পরিচ্ছেদণ্ড৪ এর বিধান অনুসারে ‘জাতীয় পর্যায়ে একটি মাত্র তাঁতী সমিতি থাকবে। মাধ্যমিক তাঁতী সমিতিসমূহের সমন্বয়ে জাতীয় তাঁতী সমিতি গঠিত হবে। জাতীয় তাঁতী সমিতির প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হবে।’ অর্থাৎ উপবিধি অনুযায়ী মাধ্যমিক তাঁতী সমিতির একজন করে প্রতিনিধি জাতীয় তাঁতী সমিতির সদস্য হবে।

জাতীয় তাঁতী সমিতি বিধিমালা-১৯৯১ এর ৫ম পরিচ্ছদের ২২(ঘ) এর বিধান মতে যথাসময়ে নির্বাচন না হলে তথা নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত না হলে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এডহক কমিটি নিযুক্ত করতে পারেন। সে অনুযায়ী ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান দুই বছরের জন্য একটি এডহক কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। উপরন্তু ৬ জুলাই ২০২৩ তারিখে এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এডহক কমিটির মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এতে সাধারণ তাঁতী ও তৃণমূল তাঁতী নেতারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একে অনিয়ম হিসেবে অবহিত করে তারা প্রধানমন্ত্রী এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। তারা এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন ও আন্দোলন শুরু করেন। এ বছর জানুয়ারি মাসে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের কাছে সংক্ষুব্ধ তাঁতীরা ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড গেল ২৭ মার্চ অফিস স্মারকের মাধ্যমে বিদ্যমান বাংলাদেশ তাঁতী সমিতির এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল করে।