ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

আগামী বাজেটের আকার হবে আট লাখ কোটি টাকা

আগামী বাজেটের আকার হবে আট লাখ কোটি টাকা

আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৮ লাখ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, ‘আসন্ন বাজেটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলন ঘটবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ১১টি বিষয় বাজেটে প্রতিফলিত হয়। এর বাইরেও কিছু বিষয় আছে, সেগুলোও রেখে বাজেট করা হবে।’ গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রিসার্স অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ, সংসদ সদস্য মো. নাসির শাহরিয়ার জাহেদী, ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বাজেট ও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকা। আমরা এরই মধ্যে নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি।’

শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমরা কর জিডিপি রেশিও বাড়াতে আগ্রহী। প্রকৃত অর্থে মুক্ত অর্থনীতির অনুসারী আমরা না। আমরা মূলত কল্যাণকর অর্থনীতির অনুসারী। জনকল্যাণ অর্থনীতির জন্য যা করার তাই করা হচ্ছে। জনকল্যাণকর অর্থনীতিতে দেশ চলছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর একটা প্রক্রিয়া হলো সুদহার বাড়ানো। সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে এটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’ ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘বিগত দুই বছরে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাদের। কোভিড-১৯, ডলার সংকট, সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবতো ছিলই। ব্যবসার ওপর ট্যাক্সের চাপ বাড়লে অর্থনীতিতে চাপ তৈরি হয়। যেটা অর্থনীতি নিতে পারবে না। এ বছর ব্যবসা করতে না পারলে ট্যাক্স ও কর্মসংস্থান কমে যাবে। আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কিছু প্রদক্ষেপ জরুরি। এর মধ্যে বিদেশি ঋণের প্রবাহ বাড়াতে হবে, ট্যাক্স না বাড়িয়ে ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে হবে এবং ট্যাক্স সম্প্রসারণ সহজ করতে হবে।’

র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ বছরের বাজেটের তাৎপর্য রয়েছে। চাপ রয়েছে মূল্যস্ফীতি ও বিদেশি মুদ্রার। আমদানি কমিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যায়, এক্ষেত্রে কিন্তু বিদেশি মুদ্রার চাপও রয়েছে আমাদের। উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো ও সরকারি ব্যয় কমানো মুখোমুখি অবস্থানে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘১০ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এ কারণে আমাদের উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তবে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে রাজস্ব আহরণ সংস্কার প্রয়োজন, মুদ্রা বিনিময়হার সংস্কার দরকার। একইভাবে ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা গুণগত মান বজায় রাখা দরকার।’

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, ‘বাজেট তৈরি করা হচ্ছে, পাস হচ্ছে কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বাজেট করা হচ্ছে বড় আকারের, একাধিক বিষয়ের বিশ্লেষণে। সাধারণরা সেখানে যেতে পারছে না। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতে বাজেট পেশ হলো কয়েক পৃষ্ঠার। আবার বাজেট তৈরি করা হয়, সব মহলের বাজেট বক্তৃতা হয়, তাহলে তার প্রতিফলন কোথায়? বাজেট তৈরির আগেই সবার মতামত নেওয়া দরকার, স্ট্যান্ডিং কমিটির সামনে পেশ ও মতামত, বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন। এটা হলে বাজেট বাস্তবায়ন না হলে তাদের ধরা যেতো।’

কর বাড়ানো নিয়ে এনবিআরের সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এনবিআরের কর আদায় প্রক্রিয়া অনলাইন বা ডিজিটালাইজেশন কেন হচ্ছে সেটা দেখতে হবে। অনেক আগেই এটা হওয়া উচিত ছিল। আজ আমাদের করদাতা বাড়ছে না। অথচ উপজেলা পর্যায়েও মানুষের আয় বেড়েছে, সে হারে করদাতা বাড়েনি। কর খেলাপিদের বাড়তি সুযোগ দেওয়ার কারণে সাধারণ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এনবিআরের কর আদায় প্রক্রিয়া অনলাইন বা ডিজিটালাইজেশনের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। এনফোর্সমেন্ট বাড়াতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ সব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণকে কাজে লাগাতে হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত