ফরিদপুরের পদ্মার বুকজুড়ে বিস্তীর্ণ পতিত জমিতে মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। কয়েক বছর আগেও যেখানে ফসল ফলানো ছিল অসম্ভব ব্যাপার, সেখানে পতিত জমি ব্যবহার উপযোগী করে ফসল ফলাচ্ছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। কয়েক বছর ধরে বেলে মাটিতে কুমড়া চাষ করে সফল তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর অন্তত ৫০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের মিষ্টিকুমড়া উৎপাদন হয়েছে জেলার ৯টি উপজেলায়। খেত থেকে কুমড়া কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন সেখানে। এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে মিষ্টিকুমড়া। এ বছর কুমড়ার বাম্পার ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা। প্রতি কেজি মিষ্টিকুমড়া খেতেই পাইকারি দরে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কুমড়া ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, চরাঞ্চলে এবার মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। আমরা মধুখালী থেকে কিনতে এসেছি। খেত থেকে সরাসরি কুমড়া কিনে ট্রাকে করে বিভিন্ন জেলায় সীমিত লাভে বিক্রি করছি। প্রতি মণ মিষ্টিকুমড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে কিনছি। চাষি হাসান শেখ বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে মিষ্টিকুমড়া আবাদে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। আমরা গাড়িতে করে বিক্রি করি। কেউ মণ হিসেবেও বিক্রি করে আবার খেত ধরেও বিক্রি করে দেয়। ১ হাজার ৫০০ টাকার কুমড়ার বীজ আর অল্প কিছু সারের খরচ লাগে। কুমড়ার ফলন এবং বিক্রি ভালো হচ্ছে। ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুরে এ বছর কুমড়ার চাষাবাদ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে। জেলায় এ বছর ৫০ কোটি টাকারও বেশি দামের কুমড়া বাজারজাতকরণ হবে বলে আশা চাষিদের।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে অনাবাদি জমি চাষের উপযোগী করে তুলেছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। এছাড়া পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ফরিদপুরে অপার সম্ভাবনাময় সবজি মিষ্টিকুমড়া। চরাঞ্চলের পতিত জমি ছাড়াও পুরো জেলায় এ বছর ৫০ কোটি টাকারও বেশি দামের কুমড়া বাজারজাতকরণ হতে পারে।