দশ হাজার ইয়াবা আছে মর্মে- প্রক্যশ্যে পার্কিং থেকে একটি অটোরিকশা সিএনজি নিয়ে যান কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন। তবে থানায় যাওয়ার পর উল্টো হয়ে যায় ঘটনাটি। সিএনজি জব্দের চার দিন হলেও গাড়ির মালিক বা চালকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না করে উল্টো পরিত্যক্ত দেখিয়ে জিডিমূলে সিএনজিটি জব্দ দেখিয়ে থানায় আটকে রেখেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন পার্কিং থেকে একটি সিএনজি জব্দের কথা স্বীকার করলেও ইয়াবার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, একটি দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে সিএনজিটি জব্দ করা হয়। এখনো পর্যন্ত মালিক বা চালককে পাওয়া যায়নি। যার কারণে জিডিমূলে গাড়িটি জব্দ রাখা হয়েছে। তার বক্তব্য মতে, গাড়িটি কার, জানতে বিআরটিএ বরাবর কোনো আবেদনও করেনি তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য মতে, গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন নেতৃত্বে দুই কনস্টবল টেকনাফ বাস স্টেশনের ঝর্ণা চত্বর পার্কিং থেকে কক্সবাজার-থ-১১-৯৫৭৬ অটোরিকশা সিএনজিটি নিয়ে যায়। ওই সময় সিএনজিটিতে ইয়াবা থাকার অভিযোগে জব্দ করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ। তবে ‘গণেশ উল্টে যায় থানায় গিয়ে। ঘটনার গত চার অতিবাহিত হলেও গাড়িটি জিডিমূলে জব্দ রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, ইয়াবা গায়েব করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা মালিক বা চালকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান না করে রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে। তাদের তথ্য মতে, ওই গাড়িতে ১০ হাজার ইয়াবা ছিল।
গতকাল সোমবার দুপুরে প্রতিবেদক গাড়িটি নিয়ে অনুসন্ধান করেন। রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি) অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রেশন-মূলে এই গাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার নাম রয়েছে।
টেকনাফসহ কয়েকজন চালকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, টেকনাফের সাবারাং এলাকায় বসবাসরত হাবিব উল্লাহ ছেলে মো. জাহেদ আলম গাড়িটি চালান। তবে তার জাতীয় পরিচয়ের তথ্য মতে, সে ভোটার হয়েছে বান্দরবান সদরের ঠিকানায়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, উখিয়ার মরিচ্যা সিএনজি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন গাড়িটি কিস্তিতে দিয়েছে। তবে কিস্তিতে কারে দিয়েছে জানতে গতকাল সোমবার বিকালে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাড়িটি টেকনাফের গোদারবিলের রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তিকে কিস্তিতে গাড়িটা দেয়া হয়। পরে কিস্তি পরিশোধ করে ফেলেন তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে টেকনাফ থানায় পূর্বে চিত্র ফুটে উঠেছে। অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিংহার ঘটনার পর টেকনাফ থানায় একটু ভিন্নতা এলেও বর্তমানে পুরোনো কারবার শুরু হয়েছে।
বিষয়টির প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল ও টেকনাফ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মাদ ওসমান গনির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
অন্য এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তারা দুই কর্মকর্তা পাহাড়ে অভিযানে থাকায় তাদের মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।