বিমান আকাশে থাকা অবস্থায় গত মাসে ঘুমিয়ে পড়েন ইন্দোনেশিয়ার দুই পাইলট। বিমান চলার সময় ওই বিমানটির পাইলটরা প্রায় ৩০ মিনিট একসঙ্গে ঘুমান। সেটি ছিল সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানের একটি ঘটনা। যেসব পাইলট যুদ্ধবিমান চালান তারাও একই সমস্যায় ভোগেন। তাদের মধ্যেও ক্লান্তি থেকে ঘুম চলে আসে। তবে এ বিষয়টির একটি আশ্চর্যজনক সমাধান রয়েছে। যুদ্ধবিমানের পাইলটরা জেগে থাকতে ড্রাগ ব্যবহার করে থাকেন। এই ড্রাগের উদ্ভাবন করেছিল জার্মানির নাৎসিরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের একটি বিমান ভূপাতিত করে ব্রিটেন। ওই বিমানের পাইলটের সঙ্গে ছিল মেথামফেটামিন নামের একটি ড্রাগ। যেসব পাইলটের ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল তাদের জাগিয়ে রাখতে নাৎসি বিমানবাহিনীর পছন্দ ছিল এই ড্রাগটি। ব্রিটিশরা এই ড্রাগটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নতুন আরেকটি ড্রাগের উদ্ভাবন করে। যা নিজেদের পাইলটের মধ্যে বিলি করে তারা। এতে রাত্রীকালীন ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য অভিযান চালাতে সক্ষম হয় ব্রিটিশ পাইলটরা। এরপর ১৯৯০-৯১ সালের গালফ যুদ্ধে জনপ্রিয়তা লাভ করে ডেক্সট্রোমফেটামাইন নামের আরেকটি ড্রাগ। ওই সময় কুয়েতে অব¯’ানরত ইরাকি বাহিনীর ওপর যেসব বিমান দিয়ে বোমা হামলা চালানো হয়েছিল তাদের সবগুলোর পাইলটই এই ড্রাগ গ্রহণ করেছিলেন। এমনকি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী তাদের পাইলটদের জন্য এই ড্রাগ ব্যবহার করে থাকে। তবে এসব ড্রাগের অনেক অনেক অসুবিধাও রয়েছে। এগুলো খুবই আসক্তিপূর্ণ। এমনকি ১৯৪০ সালের দিকেও এসব ড্রাগের অপব্যবহার হয়েছে। এ কারণে সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই ড্রাগের বিকল্প খুঁজছে। পাইলটদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে মোডাফিনিল নামের আরেকটি ড্রাগ। ১৯৭০ সালের দিকে এই ড্রাগটি উদ্ভাবিত হয়। তবে এটি সামরিক কর্মকর্তাদের নজর এড়ায়নি। এই ড্রাগটি সেবন করলে চোখের ঘুম চলে যায়। এছাড়া এরমাধ্যমে শরীরের কার্যকারিতাও অনেক বেড়ে যায়। তবে এই ড্রাগের কারণে মাথাব্যথা এবং স্মৃতিভ্রম দেখা দিতে পারে। কিš‘ সামরিক অভিযানে বের হওয়া পাইলটদের জন্য এটি খুবই উপকারী। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, এই ড্রাগটি গ্রহণ করে সর্বো”চ ৬৪ ঘণ্টা জেগেছিলেন এক ব্যক্তি। যা ২০ কাপ কফি খাওয়ার সমান।