ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উপজেলা নির্বাচন

প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির ৯ নেতাকে শোকজ

প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির ৯ নেতাকে শোকজ

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে দেড়শ’ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলায় প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৯ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাঠিয়েছে দলটি। এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ভেতরে-বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল বিকালে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রূহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রার্থী হওয়া নেতাদের এই শোকজপত্র পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেন তালুকদার।

শোকজপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হামিদ, ঢাকা আইনজীবী ফোরামের সদস্য অ্যাডভোকেট হাসনাত তারেক, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উত্তর জেলা মহিলাদলের সহ-সভাপতি মনোয়ারা বেগম ময়না, সহ-কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক সুমী বেগম এবং সাবেক ছাত্রদলনেতা এবিএম কাজল সরকার, ধোবাউড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শামছুর রশীদ মজনু, উপজেলা বিএনপির সদস্য ফরিদ আল রাজী কমল, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম খান এবং ফুলপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: এমরান হোসেন পল্লব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী জানান, বছরের পর বছর ধরে দলের সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় ভেঙে পড়েছে দলীয় শৃঙ্খলা। এ কারণে অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে দল এবং তৃণমূল চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রার্থীতার বিষয়ে জানতে চাইলে হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, আমার দল বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে না কিন্তু আমি স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচনের মাঠে আছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকব। এর আগেও আমি বিগত পৌর নির্বাচনে দলের পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়েছিলাম।

এ প্রসঙ্গে ধোবাউড়া উপজেলার প্রার্থী শামছুর রশীদ মজনু বলেন, কেউ বলছে বিএনপি নির্বাচনে যাবে, কেউ বলছে যাবে না আবার কেউ বলছে এটা দলের কৌশল। কিন্তু আমি দলের ধারধারি না। দল করে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি, জেল খেটেছি, মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে দলের মধ্যে আমার মত অনেকের কোন মূল্যায়ন নেই, এখন দল বিক্রি করে খাচ্ছে অনেকেই। তাই আমি নির্বাচন করছি, এ কারণে দল থেকে বহিস্কার হলেও আমার কোন আক্ষেপ নেই কারণ দলের বহিস্কার আদেশটিকেও আমি একটি ‘পদ বা পদবী’ মনে করি। আমি দুই বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে টানা চৌদ্দ বছর চেয়ারম্যান ছিলাম। এখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছি। জনগন আমার পাশে আছে, আশা করি নির্বাচন সুষ্ট হলে আমি শতভাগ বিজয়ী হব। তবে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তকে কৌশল হিসাবে দেখছেন ফুলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও বিএনপিনেতা এমরান হোসেন পল্লব। তিনি বলেন, নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত সঠিক কিন্তু আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। কারণ আমরা প্রার্থী না হলে উপজেলা পরিষদের মত গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানগুলো আওয়ামী লীগের হাতে চলে যাবে। আশা করি দল আমাকে বহিস্কার করবে না, আর যদি করে তখন দেখা যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত