জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল দুপুরে জামালপুর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ প্রার্থীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান রহমতুল্লা রিমু।
বক্তব্যে প্রার্থী জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অংশ গ্রহনমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে উন্মুক্ত নির্বাচনের ঘোষণা দেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা না মেনে মাদারগঞ্জে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলালের নাম ঘোষণা করেন সংসদ সদস্য মির্জা আজম। এর প্রতিবাদ করলে বাকি পাঁচ প্রার্থীকে নানাভাবে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করেন মির্জা আজম এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা। এছাড়া মির্জা আজমের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়নাল আবেদিন আয়না বলেন, ওবায়দুর রহমান বেলাল টানা তৃতীয় বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছে। তিনি মির্জা আজমের আজ্ঞাবহ ও মেরুদণ্ডহীন বলেই তাকে বার বার চেয়ারম্যান করা হচ্ছে। গত ৫ বছরে বিভিন্ন প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বেলাল সাহেব। এমন দুর্নীতিবাজ লোক আবার চেয়ারম্যান হলে মাদারগঞ্জের ক্ষতি হবে। আমরা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি বলে উল্টো আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’ মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মেশাররফ হোসেন বাদল বলেন, ‘মির্জা আজম একজন সংসদ সদস্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্বাচন প্রভাবিত করছেন। আমরা এখনো কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কোনো অভিযোগ দেইনি। আজ থেকে আমাদের কার্যক্রম শুরু।’
মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যানকে অবৈধভাবে নানা সুবিধা দিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করা হচ্ছে। বেলাল সাহেব দলীয় প্রার্থী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছে। আমরা এই বিষয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাই।’
বক্তারা অতি দ্রুত দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এসব বিষয়ে (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) ৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য সেই দিন দলের নীতি নির্ধারকরা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি সেই দায়িত্ব পালন করিনি। পরে দলের ২ হাজার ৭০০ নেতাকর্মীর নিয়ে ভোটগ্রহণ হয়। সেই ভোটে বিজয়ী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজনের নাম ঘোষণা করা হয়। এই নাম ঘোষণার পর এখনো মাঠ উন্মুক্ত আছে। চাইলে যে কেউ প্রার্থী হতে পারে। তারা পাঁচজন এরই মধ্যে প্রার্থীও হয়েছে। তাহলে বাধা কীভাবে এলো? আর আমি কারো পক্ষ নিইনি। কারো পক্ষে ভোট চাইনি। আমি নির্বাচনকে প্রভাবিত করছি না। আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’